প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে ভালোবাসার দিন। আর এই দিনেই নিজের ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে ১৪ বছরের দাম্পত্য আর দুই সন্তানকে ছেড়ে পালালেন মহিলা। দুই সন্তানকে নিয়ে কার্যত আতান্তরে স্বামী। স্ত্রীর কাছে তার কাতর আবেদন ‘ফিরে এসো।’
চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর কালীতলায় বসবাসকারী
নিতাই দের তার স্ত্রী সুমির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল চোদ্দ বছর আগে। চড়াই উতরাই নিয়ে কাটছিল তাদের দাম্পত্য। আছে দুই সন্তান। বড় ছেলে শুভম ১২ বছর বয়সী আর মেয়ে মৌসুমীর বয়স ৫। নিতাই দে রংয়ের কাজ করেন। কাজের খাতিরে প্রায় পুরো দিনটাই বাইরে বাইরে কাটে। সন্তানদের, শাশুড়ির দেখাশোনা এইসব ঘিরেই চলছিল সুমির জীবন। হয়তো একঘেয়েমিতে পড়েছিল সে এমনটাই মনে করছেন স্বামী। জানা গিয়েছে একটি ওয়েল্ডিং এর দোকানের কর্মী বাপী বড়ালের সাথে মাস ছয়েক আগে পরিচয় হয় সুমির। পরিচয় ধীরে ধীরে গড়ায় ঘনিষ্ঠতায়। আস্তে আস্তে বিষয়টি পাঁচকান হতে থাকে, এই নিয়ে সুমির শ্বশুরবাড়িতে একবার অশান্তিও হয়। কিছুদিন আগে স্বামীকে মোবাইল ফোন কিনে দেবার জন্য জোরাজুরি করে সুমি। স্ত্রীর জেদের কাছে হার মেনে মোবাইল ফোন এনে দেয় নিতাই।
নিতাই এর মা জয়া দেবী জানিয়েছেন ‘‘ফোন কাছে পাওয়ার পর থেকে সারাদিন ও ফোনেই ব্যস্ত থাকত।’’ এর আগেও নাকি একবার বিবাহ বহিঃর্ভূত প্রণয়ে জড়িয়েছিল সুমি। তখন বাঁধা দিতে ভয়াবহ অশান্তিও হয়েছিল। এমনকি সে নিজের মাথা দেওয়ালের ঠুকে ফাটিয়ে ফেলে যার দরুন তাঁকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। সেবার বউমা কে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন শাশুড়ি জয়া দে। কিন্তু আবারো এরকম ঘটনা ঘটায় ক্ষুন্ন তিনি। তাও ছেলে ও নাতি-নাতনিদের জন্য চান বৌমা সংসারে ফিরে আসুক।”
জানা গেছে দিন ১৫ আগে বড় করে মেয়ের জন্মদিনও পালন করেন নিতাই। তখনও আঁচ পাননি কিছু। এরপর ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন ডের দিন সন্ধ্যাবেলা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় সুমি। আর আসেননি। মাঝে একবার ফোন করে মেয়ের খোঁজ নিয়েছিলেন ওই অবধি। নিতাই বলেন,‘‘ জানতে পেরেছি বড়ালের এক পরিচিতের বাড়িতে উঠেছেন তাঁরা।’’
১৪ই ফেব্রুয়ারি স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার পর ১৬ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন নিতাই। স্ত্রী চলে যাওয়ায় ছেলেমেয়েকে নিয়ে দিশাহীন তিনি। কী করবেন, কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না। স্ত্রীর কাছে নিতাই এর কাতর আবেদন ‘‘ছেলেমেয়ে কাদঁছে। আমি চাই সুমি বাড়ি ফিরে আসুক।’’