করোনাভাইরাস মহামারী সারা বিশ্বে গত দুবছর ধরে নিজের দাপট দেখাচ্ছে। বিপর্যস্ত হয়েছে বহু দেশের স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা। এটি একটি ভাইরাস বাহিত রোগ হিসাবে আবির্ভূত হয়ে গত দুবছরে সারা পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষের জীবনকে শেষ করেছে। এই ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারালেও বহু মানুষ সুস্থও হয়েছেন। কোটি কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগই করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। একই সাথে, এমন কিছু মানুষও রয়েছেন যারা গত দুই বছরের করোনা কালে একবার নয়, ২-৩ বার সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু তুরস্কে বসবাসকারী একজন ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হওয়ার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন। তিনি ২-৩ বার নয়, রেকর্ড সংখ্যক ৭৮ বার করোনা পজিটিভ হয়েছেন। হয়ত অনেকে বিশ্বাস করবেন না, তবে এটি একেবারে সঠিক তথ্য, যা সকলকে অবাক করে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই ব্যক্তির নাম মুজাফফর কায়সান (Muzaffer Kayasan)। যতবারই সে করোনা পজিটিভ হয়, ততবারই সে ভাবে যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে তার মনের ইচ্ছেটা শুধু ইচ্ছে হয়েই রয়ে গেছে। তার রিপোর্টও নেগেটিভ আসেনি, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না। এমনকি ক্রমাগত পজিটিভ থাকার কারণে তাকে করোনার টিকা পর্যন্ত দেওয়া যায়নি।
ডেইলি সাবাহ (Daily Sabah) নামে একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৬ বছর বয়সী মুজাফ্ফর কায়সান ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন, তারপরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তারপর থেকে তিনি নিয়মিত কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। যদিও কিছুদিন পর তার মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা বন্ধ হয়ে গেলেও তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসেনি।
জানা গেছে গত ১৪ মাসে কায়সানের ৭৮ বার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই তার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে হোক বা বাড়িতেই হোক, কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে তার সামাজিক জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তিনি না তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটাতে পারছেন না তার বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করতে পারছেন। যদিও সে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে জানালা দিয়ে এবং দূর থেকে একটু কথা বলে, কিন্তু তাদের স্পর্শ করতে না পারার দুঃখ তাকে সারাক্ষণ কষ্ট দেয়।
কিন্তু কেন এমনটা? প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কায়সান লিউকেমিয়ায় ভুগছেন। এটি এক ধরনের ব্লাড ক্যানসার, যাতে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্যকারী শ্বেত রক্তকণিকা কমে যায় এবং এর কারণে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম হয়ে যায়। যে কারণে কায়সানের রক্ত থেকে করোনা ভাইরাস নির্মূল হচ্ছে না। যদিও তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এমন ব্যাক্তির সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
এমন কিছু মানুষও রয়েছেন যারা গত দুই বছরের করোনা কালে একবার নয়, ২-৩ বার সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু তুরস্কে বসবাসকারী একজন ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হওয়ার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন। তিনি ২-৩ বার নয়, রেকর্ড সংখ্যক ৭৮ বার করোনা পজিটিভ হয়েছেন