এ যেন ঠিক সিনেমার গল্প। যেখানে ভুয়ো বিয়ের ফাঁদে ফেলে বরের যথাসর্বস্ব লুটে পালাত কনে ও তার দলবল। এই ভাবেই চলছিল রমরমা ব্যবসা। কিন্তু অবশেষে পুলিশের ফাঁদে পড়ল তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে
জবলপুরের লুটেরি দুলহান (Luteri Dulhan) নামাঙ্কিত এক গোটা গ্যাংকে অ্যারেস্ট করেছে পুলিশ। রাজস্থান আর মধ্যপ্রদেশের বিয়ের নামে যুবকদের প্রতারণা করেছে এই চক্র। কোনো কারণবশত যে সমস্ত ব্যক্তির বিয়ে হত না বা বিয়ে করতে চাইলেও কনে মিলত না, এমন ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলত এই দলবল। আপাতত সেই ডাকাত বধূ, তার তথাকথিত প্রেমিক, ও বাকি দলবল যারা কনের আত্মীয় সেজে এই ষড়যন্ত্রের জাল বুনত তাঁরা সবাই পুলিশের হেফাজতে।
জব্বলপুর পুলিশ আন্তঃরাজ্য এই লুটেরা গ্যাং কে নিজেদের জালে ফেলে গ্রেফতার করেছে। এতে কনে সাজা মহিলা, আত্মীয় সাজা পুরুষ, নারী ও এক যুবককে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে মঙ্গলবার সিওনি চাপড়ার এক যুবককে বিয়ে করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এই কনে। সেই ঘটনার পরপরই অভিযোগ পেয়ে এই চক্রের এক নারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে যে নিজেকে কনের মাসি পরিচয় দিত। বলা হচ্ছে, জবলপুর ছাড়াও ধোলপুর, কোটা, জয়পুর, সাগর ও দামোহতে বিয়ে করে অবিবাহিত বহু যুবকদের ছিনতাই করে পালিয়েছে এই চক্রটি।
মঙ্গলবার জেলা আদালত কমপ্লেক্সের মন্দিরে রেনু রাজপুত নামে এক মহিলা সিওনির বাসিন্দা দশরথ প্যাটেলকে বিয়ে করেন। আদালতে বিয়ের রেজিস্ট্রিও হয়েছিল। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে বর দশরথ তার নববিবাহিতা স্ত্রী রেণুকে নিয়ে বাইকে করে বাড়ি যাচ্ছিল, পথে রেনু ঠিকমত বসতে পারছে না বলে বাইক থামাতে বলে একবার। দশরথ বাইক থামাতেই রেণু পেছন থেকে আসা আরেকটি বাইকে বসে পালিয়ে যায়।
জানা যায় দশরথ নামক ওই ব্যক্তির থেকে বিয়ের কারণে সোনার মঙ্গলসূত্র ও নগদ ৩০ হাজার টাকাও নিয়েছিলেন কনে রেনু। অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করলে দেখা যায় এই গ্যাংয়ের প্রধান পান্ডা অমর সিং ঠাকুর এবং অর্চনা রাজপুত ওরফে অর্চনা বর্মণ গোটা ষড়যন্ত্রের জাল বুনত। অর্চনা নিজেকে মেয়ের মাসি বলে সম্বন্ধ ঠিক করতেন। রেনুর আসল নাম রেনু আহিরওয়ার।
আর যে যুবকটির সাথে কনে বিয়ে শেষ হলে টাকা পয়সা নিয়ে বাইকে করে পালিয়ে যেত তার নাম ভাগচাঁদ কোরি। সে রেনুর কথিত প্রেমিক। ঘটনার পর পুলিশ রাতভর তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পলাতক কনে সমেত অমর সিং ও ভাগচাঁদকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে একটি স্বর্ণের মঙ্গলসূত্র ও নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ এখন এদের কুকর্মের জাল কতদূর বিস্তৃত তা তদন্ত করতে এই গ্যাং দ্বারা প্রতারিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করছে।