সমাজ মাধ্যমের যদি খুব খারাপ কোনও প্রভাব নিয়ে ভাবা যায় তবে তা হল মানুষের মধ্যে দূরত্ব! এক স্ত্রীয়ের সারাক্ষন ফেসবুকে ব্যস্ত থাকায় ঘোরতর আপত্তি ছিল স্বামীর! মেয়ের মতে প্রায় রোজই দাম্পত্য কলহ চলতো বাবা মায়ের মধ্যে রি ফেসবুক নিয়েই। কিন্তু প্রাণনাশ হতে পারে এই কারণে তা কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি। রবিবার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় স্বামীর ঝুলন্ত দেহ হাওড়ার চ্যাটার্জি হাট এলাকার। তার স্ত্রীর মৃতদেহ ওই ফ্ল্যাটের মেঝেতেই পড়েছিল। প্রাথমিক স্তরের তদন্তে মনে করা হচ্ছে যে ওই ব্যক্তি স্ত্রীকে হত্যা করে নিজেই আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ মনে করছেন এই ফেসবুক নিয়ে অশান্তির জেরেই এই ঘটনা।
মৃতদের নাম গৌতম মাইতি এবং মৌসুমীমাইতি পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। দুই মেয়ের সঙ্গে সংসার করছিলেন তাঁরা চ্যাটার্জি হাটের নন্দলাল মুখার্জি লেনে। এই দুজনের মধ্যে একজন নবম শ্রেণির ছাত্রী, ছোটটি তৃতীয় শ্রেণির। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সকালে ওনাদের দুই মেয়ে আঁকা শিখতে গিয়েছিল অন্য রবিবারের মতো। দুপুরে ফিরে আসে তারা। দীর্ঘক্ষণ কেউ দরজা খোলেনি কলিং বেল বাজালেও। তখন প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করে তারাই। পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা অনেক চেষ্টাতেও ভিতর থেকে কারও সাড়া না পেয়ে। দরজা ভেঙে দেখা যায় মৌসুমীর দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। গৌতম সিলিং থেকে ঝুলছেন।
মৃত ওই দম্পতির বড় মেয়ে জানিয়েছে, ফেসবুক ব্যববহার করতেন মা। আর ঘোরতর আপত্তি ছিল বাবার এই বিষয়েই। সন্তানদের প্রতি আরও বেশি নজর দিক তাদের মা এমনটাই চাইতেন তিনি। আরও জানায়, দম্পতির বড় মেয়ে মা ফেসবুকে স্ক্রল করতেন শুধুমাত্র। আর বাবার আপত্তি ছিল এতেই। মাঝে মধ্যেই তাঁদের অশান্তি হত বিষয়টি নিয়ে। সেক্ষেত্রে দম্পতির মধ্যে বিবাদ শুরু হয় ফেসবুক ঘাঁটার জন্যই এবং মৌসুমীকে হত্যা করে আত্মঘাতী হন গৌতম, প্রথমিকভাবে এই সন্দেহ করছে পুলিশ। তবে কি শুধুই ফেসবুক অশান্তির কারণ! নাকি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে এর পিছনে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কোনও রকম ধার দেনা ছিল কিনা গৌতমের তাও খোঁজ করে দেখা হচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন গৌতম মাইতি হাওড়ার একটি পানশালায়। আদতে কোলাঘাট এলাকার বাসিন্দা তিনি। মেদিনীপুরে মৌসুমীর বাপের বাড়ি। তাঁরা চ্যাটার্জি হাট এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন কাজের সুবাদেই বছর তিনেক আগে।