অনেকের প্রিয় খাবারের তালিকায় বেশ ওপরের দিকেই রয়েছে হটডগ। আর আমেরিকার অন্যতম জনপ্রিয় মুখরোচক স্নাকসের তালিকায় পরে হট ডগ। লম্বা বান পাউরুটির ভেতরে সসেজ ভরা আর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মেয়োনিজ এবং চিজ। সব কিছু মিলিয়ে অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার হট ডগ। কিন্তু এর নাম এত অদ্ভুত কেন? কুকুরের সঙ্গে এই খাদ্যের কোনো সম্পর্ক নেই? মুরগী, শুয়োর বা বিফ ব্যাবহৃত হয় পাউরুটির ভেতরের সসেজে। কিন্তু তাহলে এই নাম কেন? এই প্রশ্ন আসে অনেকের মনেই।
হট ডগের জন্মস্থান মূলত জার্মানি। তখন চাকা লাগানো ঠেলাগাড়িতে করে গরম গরম খাবারটি পরিবেশিত হতো। শুরুতে পাউরুটি না শুধু সসেজ বিক্রি হতো। তখন এর নাম ছিল ‘ডাচসান্ড সসেজ।’ শ্রমিক বা দিনমজুরেরা ছিল এর খদ্দের। খেতে গিয়ে চিজ বা সস ইত্যাদি হাতে মেখে যেত। এর উপায় হিসাবেই এক বিক্রেতা বান পাউরুটির ভেতর সসেজ আর বাকি জিনিস পুরে বিক্রি শুরু করেন। এই খাবার জার্মানি থেকে আমেরিকা পৌঁছায় ১৮৬০ সালে শরণার্থীদের হাত ধরে। দ্রুত সে দেশে জনপ্রিয়তা পায় হট ডগ।
সেই সময় জার্মানিতে কুকুরের মাংস খাওয়া হত। তাই অনেকেরই ধারণা ছিল জার্মানির এই ‘ডাচসান্ড সসেজ’ তৈরি করা হয় কুকুরের মাংস দিয়ে। অনেকেই তখন এই সসেজকে ডগ বলে অভিহিত করত। তবে হট ডগ নামকরণ হয় আরও পরে, আমেরিকায়।
তবে এই ঘিরে একটি কাহিনী আছে। নিউ ইয়র্কের পোলো গ্রাউন্ডের বাইরে ঠেলাগাড়ি করে ডাচশান্ড সসেজ বিক্রি করছিলেন এক জার্মান ব্যবসায়ী। তিনি এই খাবার বিক্রির সময়ে কিছু অভিনব অভিনব নাম ধরে চিৎকার করে ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন। তা কানে যায় সেখানে উপস্থিত সংবাদপত্রের কার্টুনিস্ট থমাস আলয়সিয়াস দর্গান এর কানে। তিনি সংবাদপত্রের জন্য এই বিষয়ে একটি কার্টুন আঁকতে গিয়ে বিক্রেতা ঠিক কী নামে ডেকে খাবারটি নিয়ে চিৎকার করছিল তা ভুলে যান। কেবল মনে ছিল খাবারটি ছিল এক ধরনের সসেজ এবং সেটি গরম গরম পরিবেশন করা হচ্ছিল। জার্মানিতে সসেজকে ডগ বলা হতো আর যেহেতু গরম গরম বিক্রী হচ্ছিলো, তিনি তাই একে হট ডগ নাম দিয়ে দেন। কিন্তু সেই কার্টুন এতোটাই জনপ্রিয় হয় যে, পাকাপাকি এই খাবারের নাম হয়ে যায় হট ডগ।
তবে নামকরণ বিষয়ে আরো একটি মত আছে। সেটি হল, সসেজ দেখতে অনেকটা লম্বাটে চিকন আকৃতি কুকুরের ক্যানিন ব্রিডের মতো। এ কারণেই এই নাম হট ডগ।