Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

মাছ অথবা কোনো প্রাণী নয়, মন্দিরের প্রসাদ খেয়েই ৭০ বছর কাটিয়েছে ‘নিরামিষাশী’ কুমির

নাম বাবিয়া। কুমিরের এমন নাম অবাক লাগতে পারে কিন্তু এই কুমির মাছ মাংসভুক হিংস্র নয়। নিরামিষ অন্নপ্রসাদেই সে সন্তুষ্ট। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। মন্দির লাগোয়া পুকুরে বাস তার। আর ভাতের থালা হাতে যখন পুরোহিত ডাক দেয় তখন সে হাজির হয় সে।

কেরলের বিখ্যাত মন্দির শ্রী অনন্ত পদ্মনাভস্বামী। জনশ্রুতি আছে, কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামীর আদিরূপ এই বিগ্রহ। আর এই মন্দিরের গায়েই আছে এক পুকুর। এই মন্দির চত্বরে পুকুরে থাকার কারণে সে মাছ-মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কুমির হলেও ছাড় পায়নি বাবিয়া। তাই প্রসাদান্নে বেচে আছে এই কুমির।

বিষ্ণু মন্দিরে অন্নভোগ শেষ হলেই প্রসাদান্নে থালায় গুছিয়ে মন্দিরের পুকুর ঘাটে নামেন পুরোহিত। কুমিরকে নিজের হাতে তিনি ভাত খাওয়ান।

মন্দিরের বক্তব্য অনুযায়ী এই ভোজনে কুমীর বাবিয়ার কোনো অসুবিধা হয় না। সে শাকাহারি কুমীর। তার প্রিয় খাবার ভাত। দুপুরে আর রাতে সে পেট ভরে ভাত খায়।

সূত্র অনুযায়ী রোজ দু’বেলা এক কেজি চালের ভাত অন্তত লাগে বাবিয়ার। পুকুরে কিন্তু কুমীরের সাথে মাছও আছে। তবে সেই সব মাছকে সে নাকি ছুঁয়েও দেখে না! গত ৭০ বছরে এটাই তার ভোজন। তবে বিশেষ তিথি, উৎসব-পার্বণে মন্দিরের ভোগের অদল বদলের সাথে তারও খাওয়া দাওয়া বদলে যায়। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত নিজেকে সেই কুমীরের ‘বন্ধু’ বলে দাবি করেন। এমনকি কুমীর বাবিয়া যে সত্যিই হিংস্র নিন, তা প্রমাণ করতে ওই পুকুরে নেমে স্নানও করেন তিনি।তার মতে বাবিয়া, সাক্ষাৎ ভগবানের দূত।’’

নিরামিষাশী এই কুমিরের গল্প ছড়িয়েছে বহু দূর দূরান্তে। আজকাল এই নিরামিষাশী কুমীরকে দেখতেও কেরলের এই মন্দিরে ভিড় জমান অনেকে।

কিন্তু কুমিরের পক্ষে কি সত্যিই নিরামিষাশী হয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব? তাও বছরের পর বছর। কেরলের ওই মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের বক্তব্য মত, আর পাঁচটা কুমির হয়তো পারত না। কিন্তু বাবিয়া স্বয়ং ‘ঈশ্বরের দূত’। দেবালয়কে রক্ষী হিসাবে স্বয়ং ঈশ্বরই পাঠিয়েছেন তাকে। তাই তাঁর পক্ষে এটা কোনো ব্যাপার নয়।

কুমির বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী বলছেন, ‘‘বিষয়টি যদিও অস্বাভাবিক। কিন্তু যে কুমিরটিকে নিরামিষাশী বলে এখানে বর্ণনা করা হচ্ছে সেটির বাস মিষ্টি জলে (মগর)। মাছ খেয়েই এরা বাঁচে কিন্তু মাংসও খেয়ে থাকে।’’

পাশাপাশি আরো বলেন ‘‘কুমিরের পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে বেঁচে থাকার ক্ষমতা বাকি জন্তুর থেকে অনেক বেশি। এরা যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।’’

বিশেষজ্ঞরা আরো জানান,‘‘ কুমিরেরা খুব দ্রুত পোষ মেনে যায়। তা ছাড়া এনাদের যারা খাবার দেয়, তাদের সঙ্গেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।’’

Related posts

স্বর্গের প্রকৌশলী! রাবণের লঙ্কা থেকে কৃষ্ণ নগরী দ্বারকা, বিশ্বকর্মার এই নির্মাণগুলির বিষয়ে জানেন

News Desk

দৌড়তে দৌড়তে ফিনিশিং লাইনের কাছে পৌঁছে আচমকাই পরে গেলেন যুবক! ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা

News Desk

ভয়াবহ অভিজ্ঞতা! এক্সপ্রেস ট্রেনে ভিখারির পাল্লায় পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেন চন্দননগরের দম্পতি

News Desk