এ যেন ঠিক সিনেমার কোনো অবিশ্বাস্য চিত্রনাট্য। বা সিনেমাতেও এমনটা হয় কিনা বলা শক্ত। নিজের বিবাহিত স্বামীর সঙ্গে পাকিস্তানে (Pakistan) গিয়ে নিজের পাকিস্তানি প্রেমিক যুবককে বিয়ে করলেন কলকাতার তরুণী। আর নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে পাকিস্তান অবধি নিয়ে যাওয়া, তার পাকিস্তানি প্রেমিকের সাথে বিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে সমস্ত দায়িত্ব পালন করলেন তরুণীর স্বামী। তরুণী জাতিতে শিখ। পাকিস্তানে ভারতীয়দের অনেকেই যান কর্তারপুর করিডোরে। মূলত ধর্মের উদ্দেশ্যেই এই দর্শন। আর সেই পথ ব্যাবহার করেই গুরুপর্বে পাকিস্তানে পৌঁছেছিলেন ওই শিখ তরুণী। কিন্তু এই ঘটনায় প্রবল চটেছেন শিখ সম্প্রদায়। তারা জানিয়েছেন এমন কাজে অসম্মানিত হয়েছেন। অসন্তোষ জাহির করেছেন দিল্লির শিখ গুরুদুয়ার কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন সভাপতি।
ঘটনাটা কী তাহলে খোলসা করে বলা যাক। গত ১৭ই নভেম্বর গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী (Guru Nanak Jayanti) উপলক্ষে আট্টারি সীমান্তে কর্তারপুর হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছন কলকাতার শিখ তরুণী। এরপর ২৪ নভেম্বর লাহোরের (Lahore) বাসিন্দা মহম্মদ ইমরানের সাথে বিয়ে হয় তার। আর বিয়ের জন্যে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন। তরুণীর মুসলমান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে নাম রাখা হয়েছে পারভিনা সুলতানা। এই বিয়ের পুরো বিষয়ে তরুণীর সাথে ছিলেন তরুণীর আগের স্বামী।
জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে লাহোর নিবাসী ইমরানের সাথে প্রেম জমেছিল কলকাতার তরুণীর। তবে এই প্রেমের বিষয়ে অবগত ছিলেন তরুণীর স্বামী। সেই কারণেই স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পরিকল্পনা পূর্বক পাকিস্তানে পৌঁছন স্বামী। তবে, বিয়ে করলেও পাক প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় নতুন স্বামীর সঙ্গে পাকিস্তানে থাকা হয়নি কলকাতার তরুণীর। একই কারণে নব বিবাহিতা স্ত্রীর সঙ্গে কলকাতায় আসতে পারেননি পাকিস্তানের ইমরানও। তবে কলকাতায় পৌঁছে পাকিস্তানি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন ধর্মান্তরিত পারভিনা সুলতানা। ভিসা মঞ্জুর হলেই পাকিস্তানে স্বামীর কাছে যেতে চান তিনি।
কিন্তু গোটা ঘটনা জুড়ে অসন্তুষ্ট শিখ সম্প্রদায়ে। দিল্লির শিখ গুরুদুয়ার কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন সভাপতি পরমজিৎ সিং সরনার (Paramjit Singh Sarna) জানিয়েছেন, গুরু নানকের জন্ম জয়ন্তী কে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে এমন কাজ করার ফলে তাঁদের সম্প্রদায় অসম্মানিত হয়েছে। তিনি বলেন, “ এই ঘটনার ফলে শিখ তীর্থযাত্রীদের ওপর পাকিস্তানে গুরু নানকের কর্তরপুর যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।” শিখ তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্য তার বার্তা, পাকিস্তানে যে ধর্মীর উদ্দেশে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ যান, এর বাইরে যেন কোনো কিছু তারা না করেন।