চিকেন টিক্কা মসলা, তর্কাতীতভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ “ডিশ” এবং এর ফ্লেভার এর জন্য বিখ্যাত। কিন্তু ভারতে জনপ্রিয় এই ডিশ কিভাবে ব্রিটিশ হলো।
টিক্কার চলটা শুরু হয় মোঘল সম্রাট বাবরের হাত ধরে। বাবর নাকি ভয় পেতেন হাড় থাকা মুরগির মাংস খেতে, পাছে গলায় হাড় বিঁধে যায় যদি। তখন তিনি তাঁর পাঞ্জাবি বাবুর্চিদের হুকুম করলেন হাড় ছাড়া মুরগির মাংস রান্না করতে। এই থেকেই চিকেন টিক্কার জন্ম। কিন্তু এই খাবারটি কি করে পারি দিল সুদূর ব্রিটেনে। হয়ে উঠলো তাদের এতো প্রিয় খাদ্য। এমনকি ব্রিটিশরা এই চিকেন টিক্কা মশালা কে নিজেদের বলে দাবি করে। কি করে এই খাবার হয়ে উঠল এত প্রিয় ব্রিটিশদের।
স্বাধীনতার পর পর পাঞ্জাব থেকে যখন লোকেরা ইউরোপে পাড়ি জমাতে শুরু করে, তখন তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে গেল এই রান্নার রেসিপিও। যদিও ব্রিটেনে একটা গল্প আছে, এক ভারতীয় রেস্তোরাঁয় নাকি বাংলাদেশি রাঁধুনীর হাত থেকেই নাকি চিকেন টিক্কা মসালা (Chicken Tikka Masala) বেরিয়েছে।
কথিত আছে ১৯৬০ এর দশকে একজন ক্ষুধার্ত ব্রিটিশ ব্যক্তি এবং একজন বাংলাদেশী শেফ (তখন, ব্রিটেনের বেশিরভাগ ভারতীয় রেস্তোরাঁর মালিকানা ছিল বাংলাদেশী শেফদের দ্বারা) এর মধ্যে কথোপকথন চলছিল।
ব্রিটিশ ব্যাক্তি শেফ কে ডেকে বলেন “মাফ করবেন,” লোকটি শেফকে বলে। “এই চিকেন টিক্কাটা একটু শুকনো, তুমি কি এর থেকে ভালো কিছু আনতে পারো।” তার গ্রাহকের আবদার শুনে শেফ রান্নাঘরে ফিরে আসে। চারপাশে তাকিয়ে তিনি টমেটো স্যুপের একটি ক্যান দেখতে পান এবং তার মাথায় আসে একটি আইডিয়া। সে স্যুপ গরম করে, তাতে কিছু মশলা এবং এক টুকরো দই ফেলে মুরগির ওপর ঢেলে দেয়।
তিনি তার গ্রাহকের কাছে খাবারটি উপস্থাপন করেন, আর ওই ব্রিটিশ ব্যাক্তি সেই খাবারের স্বাদ পেলেই রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠেন। আস্তে আস্তে খাবারটির নাম ছড়িয়ে পরে এবং হয় ওঠে ব্রিটিশদের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার, চিকেন টিক্কা মসলা।
অনেকে এবার এই গল্প বিশ্বাস করতে চান না। তারা মনে করেন এটি পরাধীন ভারতে তৈরি হয় এবং কালের প্রভাবে এটির রূপ পরিবর্তন হয়। তারা মনে করেন বাটার চিকেন নাকি চিকেন টিক্কা মশালার আদি রূপ।