রাজ্যে করোনা সংক্রমণের বেলাগাম গতি রোধ করতে ও সংক্রমনের শৃঙ্খল ভাঙতে ৬ই মে, বৃহস্পতিবার থেকে লোকাল ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরেই সরকারি ভাবে জানানো এখনকার মতো আগামী ২ সপ্তাহ এই সিদ্ধান্ত কায়েম থাকবে। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও রেলের নিত্যযাত্রীদের অনেকেরই প্রশ্ন, এখন তাঁদের রুজি-রুটির কী হবে?
গত বছর করোনার কারনে আট মাস বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ফের চালু হয়েছিল লোকাল ট্রেন। এর পর প্রায় ৬ মাস চলার পর আবার বন্ধ হচ্ছে শহরতলির সব থেকে প্রয়োজনীয় ট্রান্সপোর্ট ব্যাবস্থা টি। কলকাতা পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি জেলা থেকে রোজ লক্ষ মানুষ কলকাতায় কর্ম সূত্রে যাতায়াত করেন। তাঁদের কাছে এই লোকাল ট্রেনই ভরসা। গতবছর ট্রেন বন্ধের থাকাকালীন এক সময় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছিল যাত্রীদের। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ-অবরোধ করেছিলেন তাঁরা। তারপরে নভেম্বর থেকে ট্রেন চলতে শুরু করায় স্বাভাবিক হতে শুরু করে জনজীবন।
দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলাতেই গণপরিবহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে লোকাল ট্রেন। সেই ট্রেন যদি না চলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে এটা স্বাভাবিক। যদিও রাজ্যের চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, করোনা যে হারে বাড়ছে তাতে ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না সরকারের। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অনেকের কথা শুধু লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখলেই কি করোনা শৃঙ্খল ভাঙা যাবে? কর্মস্থল তো খোলা থাকলে সেখানে যে ভাবে হোক পৌঁছাতে হবে। বাসে বা অন্য কোনও গণমাধ্যম তাঁরা ব্যাবহার করবেন। সম্পূর্ন লকডাউন হলে সেই তাগিদ থাকবে না। কিন্তু তাতে করেও যাঁরা সামান্য বেতনে বেসরকারি জায়গায় কাজ করেন, তারা সমস্যায় পড়তে হবে।
লোকাল ট্রেন বন্ধের জেরে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়বেন হকাররা। পূর্ব রেলের হকার ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের আরও একটু ভাবনা চিন্তা করা উচিত ছিল লোকাল ট্রেন বন্ধ করার আগে। এবারে সমস্ত চাপ গিয়ে পড়বে সরকারি বাসের উপর। সেখান থেকেও কি সংক্রমণ বাড়বে না? তাই আমরা মনে করি, সরকার বিষয়টি নিয়ে আরও একটু চিন্তা-ভাবনা করুক।’’