দীপাবলির অমাব্যসার তিথির ঠিক ১৫ দিন পরেই পালিত হয় কার্তিক পূর্ণিমা। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের পরে যে পূর্ণিমা আসে সেই পূর্ণিমাকে বলা হয় কার্তিক পূর্ণিমা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে কার্তিক শিব ও বিষ্ণুর মাস এবং যেমন কার্তিক মাসের অমাবস্যায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ন সহকারে পালিত হয় দীপাবলি তেমনই কার্তিক পূর্ণিমারও একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথি কে ত্রিপুরারী পূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়। এই বছর ২০২১ সালের কার্তিক পূর্ণিমা তিথি অনুযায়ী পড়েছে ১৯শে নভেম্বর, শুক্রবার।
কার্তিক পূর্ণিমার নির্ঘণ্ট-
পঞ্চাঙ্গ অনুযায়ী, এই বছরের কার্তিক পূর্ণিমা তিথি লাগছে ১৮ নভেম্বর দুপুর ১২টা থেকে আর পূর্ণিমা ছাড়বে ১৯ নভেম্বর দুপুর ২.২৭ মিনিটে। ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে পালিত হবে দেব দীপাবলি উৎসব।
কার্তিক পূর্ণিমাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাকি বিশেষ বিশেষ পূর্ণিমা তিথির মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র এবং তাৎপর্যপূর্ন বলে মনে করেন। দীপাবলির মতো, এই দিনও বাড়িতে বাড়িতে অনেকে প্রদীপ জ্বালান এবং বিশেষ ভাবে পূজা পাঠ করেন। শাস্ত্র অনুযায়ী এই পূর্ণিমার পূজায় ঈশ্বর বিশেষ ভাবে প্রসন্ন হন। পুরাণ অনুযায়ী এই দিনে ভগবান শিব ত্রিপুরাসুর রাক্ষসকে বধ করেছিলেন। আর এই রাক্ষস বধের খুশিতে স্বর্গে দেবতারা দ্বীপ জ্বালিয়ে আনন্দ উদযাপন করেছিলেন। তাই এই দিনটিকে দেব দীপাবলি বলে।
বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী, কার্তিক পূর্ণিমার দিনই ভগবান বিষ্ণু মৎস্যে অবতারের রূপ নিয়েছিলেন। এই দিনে নদীতে স্নান করে শুদ্ধ হতে হয়। এছাড়াও ভগবান বিষ্ণু ও মা লক্ষ্মীর পূজা করার বিধান আছে কার্তিক পূর্ণিমায়। এই দিনে মন দিয়ে ঈশ্বরের পূজো করলে আর দান ধ্যান করলে বিশেষ পুণ্য লাভ করা যায়। তাই এই দিনে শীতের জামা ইত্যাদি গরীবদের দান করা হয়। বিশ্বাস করা হয় ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রাপ্ত এই দেব দীপাবলির দিনে ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর পূজা করলে সমস্ত অশান্তি দূর হয় জীবন থেকে। সেই সঙ্গে অর্থের অভাবও দূর হয়।
জেনে নিন কার্তিক পূর্ণিমার দিন নিজের রাশি অনুযায়ী কী কী জিনিস দান করলে ভালো ফল মেলে…
মেষ রাশি – গুড় দান করুন।
বৃষ রাশি- শীতের উপযোগী গরম জামা দান করুন।
মিথুন রাশি – মুগ ডাল দান করুন।
কর্কট রাশি – ধান বা চাল দান করুন।
সিংহ রাশি – গম দান করুন।
কর্কট রাশি – সবুজ দানা বা সবুজ রঙ এর কোনো খাবার দান করুন।
তুলা- খাদ্য দ্রব্যাদি দান করুন।
বৃশ্চক- গুড় আর ছোলা দান করুন।
ধনু – শীতের জামা, আর শীতকালীন ফসল যেমন বাজরা, দান করুন।
মকর- কম্বল দান করুন
কুম্ভ- কালো রঙের কলাইয়ের ডাল দান করুন।
মীন – হলুদ ও বেসনের দিয়ে তৈরি মিষ্টান্ন দান করুন।