Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

জাঁকজমক ও অভিনবত্বে বিখ্যাত চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন কীভাবে হল? জেনে নিন

দুর্গাপুজো শেষ। লক্ষ্মী পুজোর পরে কালীপুজোও সমাপ্ত। সারা বাংলার মন খারাপ হলেও চন্দননগরবাসীরা তখন তাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব আয়োজনে মেতে উঠে। মা জগদ্ধাত্রীরূপে ফিরিয়ে আনতে ব্যস্ত থাকেন। ইতিহাস অনুযায়ী নদীয়ার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো সূত্রপাত হলেও আড়ম্বর, জাঁকজমক ও নিত্যনতুন চিন্তাভাবনার মিশেলে ভরপুর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো বর্তমানে ভীষণ জনপ্রিয়। বহু দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই পুজো দেখতে আসে। আর চন্দননগরের আলোকসজ্জা এবং বিসর্জন শোভাযাত্রাকে তো অনায়াসেই আন্তর্জাতিক যে কোনো উৎসবের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। তবে গত বছরের মত এবছর কোভিড ১৯ এর কারণে পুজোয় অনেক বিধিনিষেধ থাকলেও, মানুষ মেতেছে উৎসবে। জানেন চন্দননগরে এই জগদ্ধাত্রী পুজো কিভাবে শুরু।

অষ্টাদশ শতকে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন করে। যদিও দেবী জগদ্ধাত্রী যে সেই প্রথম নয় তার প্রমাণও পাওয়া যায়। শূলপাণি খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে কালবিবেক গ্রন্থে কার্তিক মাসে জগদ্ধাত্রী পূজার করার বিষয়ে উল্লেখ করেন।

চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার শুরু ঠিক কবে হয়েছিলো, এ বিষয়ে সঠিক ভাবে আজও কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে এই পুজো শুরুর কাহিনী। প্রায় আড়াইশো বছর আগে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু করেন। বলা যায় সেই সময় আশ্বিন মাসে সারা বাংলার মানুষ দুর্গাপুজোয় মাতলেও ধান ওঠার কারনে চাউল পট্টির মানুষদের ব্যস্ততা থাকতো চরমে। চাল মাপ ঝোপ করে আড়তে তুলে নৌকা ভরে নানা জায়গায় পাঠাতে হয়। তাই ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী তাদের কথা মাথায় রেখেই দুর্গাপুজোর এক মাস পর শুরু করেন জগদ্ধাত্রী পুজো। দুর্গাপুজোয় না অংশগ্রহণ করার কষ্ট ভুললেন চাউলপট্টির ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয় ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে। ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরে ব্যাপক লুটপাট হয়। বাদ যায়নি ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী বাড়ি ও। পরিস্থিতি দেখেশুনে ইন্দ্রনারায়ণের গৃহের জগদ্ধাত্রী পুজো চাউলপট্টিতে নিয়ে গেলেন ব্যবসায়ীরা। সেই থেকে আজ অবধি পুজো হয় সেখানেই।

এই পুজোর জগদ্ধাত্রীকে ডাকা হয় আদি মা। এখনও পর্যন্ত পুরুষানুক্রমে দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে পূজার সংকল্প হয়। চাউল পট্টির আদি মার বৈশিষ্ট্য হল সনাতনরীতির প্রতিমায় সাদা সিংহ এবং বিপরীতমুখী অবস্থানে হাতি। শোনা যায়, দশমীর দিন বিসর্জনের সময় আদি প্রতিমা জলে পড়লেই নাকি সাপের দেখা পাওয়া যায়। স্থানীয় বিশ্বাস আদি মা অত্যন্ত জাগ্রত।

Related posts

ভারতে আবারও ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমনের গ্রাফ, বাড়লো মৃত্যুও

News Desk

বান্ধবীকে প্রেমিকের সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে গিয়ে ফ্যাসাদে প্রেমিকা! চোখের সামনে পালাল দুজনে

News Desk

অদ্ভুত! বাসে ওঠে ৩০ টাকা বাসভাড়া গুনতে হল মোরগকে! বিষয়টা কী?

News Desk