Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

বাংলার এই গ্রামে ভাইফোঁটার দিন পুজো পান চিত্রগুপ্ত! একশ বছরেরও বেশী সময় ধরে চলে আসছে এই রীতি

তেত্রিশ কোটি দেবদেবীদের মধ্যে যাঁদের পুজো করা হয়ে থাকে তাঁদের নাম বাঙালি মাত্রই অবগত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মানুষ ছাড়া বাকি কোনো বাঙালিই জানেন না যে হুগলি জেলার অন্তর্গত বাতানল গ্রামের কায়স্থ সম্প্রদায়ের মানুষরা এমন একজন দেবতার পুজো করে থাকেন, যিনি স্বর্গে বসে বসে মর্ত-মানুষদের জীবনের আয়ু ঠিক করেন, তিনি লিখে রাখেন মানব জীবনের পাপ-পুণ্যের খতিয়ান। তাঁর হিসেব থেকেই স্থির হয়, মৃত্যুর পর আমরা কত দিন স্বর্গ ও কত দিন নরকে বাস করতে পারবো।

সেই হিসেব অনুযায়ী যমরাজ মর্তে আসেন মৃত মানুষের আত্মাকে নিয়ে যেতে। চিত্রগুপ্ত ভারত ও নেপালের কায়স্থ সম্প্রদায়ের কাছে উপাস্য দেবতা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কোথাও এনার পুজো দেখতে পাওয়া যায় না, একমাত্র হুগলির শেষ সীমায় আরামবাগের বাতানল গ্রাম ছাড়া। প্রায় ১১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিত্রগুপ্তের পুজো করে আসছেন এই গ্রামের কায়স্থপাড়ার ১৯টি পরিবার। শোনা যায় গ্রামের আদি বাসিন্দা ভূপালচন্দ্র সরকার এই পুজোর আয়োজন করেন। বংশ পরাম্পরায় আজও নিয়ম মেনে পুজো করে চলেছেন বর্তমান প্রজন্ম। কালীপুজোর পর আসে ভাইফোঁটা। আর ভাইফোটার দিনেই পূজিত হন চিত্রগুপ্ত। কিন্তু ভাইফোটার দিনেই কেন পুজো? তার উত্তরে যানা যায় যে, চিত্রগুপ্ত নিজে কায়স্থ। এর পৌরাণিক কাহিনি হল, ব্রহ্মার ‘কায়া’ মানে শরীর থেকে চিত্রগুপ্ত উদ্ভূত হয়েছিলেন বলে তিনি কায়স্থ।

যমুনা তাঁর দাদা যমের দীর্ঘায়ু কামনা করে ফোঁটা দিয়েছিলেন। আর মানুষের আয়ুর হিসেব থাকে চিত্রগুপ্তের খাতায়। তাই তাঁকে তুষ্ট করতে এখানকার বাসিন্দারা চিত্রগুপ্ত পুজোর প্রচলন করেন। চিত্রগুপ্তকে তুষ্ট করলে ভাইয়েরা দীর্ঘায়ু পাবে। তবে পুজো শুরুরও একটা ইতিহাস পাওয়া যায়। ১৯০১ সালে ব্রিটিশ আমলা হারবার্ট হোপ রিজলি বাংলার জনগনের সঙ্গে বাংলায় বসবাসকারী জাতিদের সামাজিক অবস্থানের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। দেখা যায়, অন্যান্য জাতিদের নিরিখে কায়স্থদের সামাজিক অবস্থান ছ’নম্বরে। এর প্রতিবাদে সেই বছরেই তৈরি হয়েছিল ‘বঙ্গদেশীয় কায়স্থ সভা’। কিন্তু দেবতাদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক না থাকলে কৌলিন্য আদায় করা যায় না। তাই চিত্রগুপ্তকে পুজো করা কর্তব্য।

বঙ্গদেশীয় কায়স্থ সভার ‘কায়স্থ’ পত্রিকা থেকে জানা যায় যে, হুগলি জেলার আরামবাগ মহুকুমার বাতানল গ্রামের চিত্রগুপ্ত পুজো করা হয়। এই গ্রামের একটি বৈশিষ্ট্য হল, গ্রামের মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে এলেও, গ্রামের বউরা কেউ বাপের বাড়ি যান না। তাঁদের ভাইরা আসেন ফোঁটা নিতে।

Related posts

ময়ূরের ডিম চুরি করতে গেছিল মহিলা, আজীবন মনে রাখার মতো শিক্ষা দিল পাখিটি

News Desk

বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে পারে, খোঁজ মিলল নতুন করোনা ভেরিয়েন্ট ‘মু’ এর

News Desk

ছেলের হাতেই ভাইরাল মায়ের গোপন মুহূর্তের ভিডিও! শেয়ার হলো সব আত্মীয়-স্বজনের কাছে

News Desk