সম্প্রতি শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান কে এনসিবি গ্রেফতার করেছিল মাদক কাণ্ডে এবং এরপর তার আদালতের রায়ে জামিন পাওয়ার জন্য মান্নাত আজ খবরের শিরোনামে। শাহরুখ খানের ফ্যানেরা সারা দেশ জুড়ে রয়েছে তাদের কাছে মুম্বাইয়ের অন্যতম দর্শনীয় স্থান শাহরুখের প্রাসাদ মান্নাত। গোটা মুম্বাইতে ব্যক্তিগত যত সব চেয়ে দামি বাড়ির যদি তালিকা করা হয় তাহলে মান্নাত উপরের দিকেই থাকবে। বরাবরই বাদশার প্রাসাদ নিয়ে খুব উত্তেজনা থাকে ফ্যান দের। বিশেষভাবে এই প্রসাদের অন্দরমহল দেখার জন্য বেশি ভিড় হয়।
কিন্তু আপনি কি জানেন শাহরুখ বানাননি এই বাংলো! প্রথমে অন্য এক ব্যক্তির হাতে ‘মন্নত’-এর মালিকানা ছিল। প্রাসাদোপম ওই বাড়িটি অনেক দাম কষাকষির পর বিক্রি করতে ওই ব্যক্তিকে শাহরুখ রাজি করিয়েছিলেন এবং পরে তিনি তাঁর থেকেই বাড়িটি কিনে নেন।
এই বাড়িটিতে মন পড়ে গিয়েছিল শাহরুখের ১৯৯৭ সালে ‘ইয়েস বস’ ছবি করার পর থেকেই। ‘মন্নত’-এর সামনেই ‘ইয়েস বস’ ছবির একটি অংশের শ্যুটিং হয়েছিল। তখন ‘ভিলা ভিয়েনা’ বাড়িটির নাম ছিল।
ওই ভিলা ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল গুজরাতি ব্যবসায়ী নরিম্যান দুবাসের। ওই ব্যবসায়ী বংশ পরম্পরায় এই ভিলাতেই থাকতেন। পরে অন্য একটি বাড়িতে তিনি চলে গিয়েছিলেন। তারপরই শাহরুখ বাড়িটি কেনার চেষ্টা শুরু করেছিলেন।
ব্যবসায়ী নরিম্যানের সঙ্গে ২০০১ সালে দেখা করেন শাহরুখ। তিনিই নরিম্যানকে রাজি করিয়েছিলেন বাড়িটি বিক্রি করতে। অনেক দর কষাকষির পর তিনি ১৩ কোটি ৩২ লক্ষ টাকায় সেই ভিলা কেনেন। এখন অন্তত ২০০ কোটি টাকা বাড়িটির মূল্য। ‘ভিলা ভিয়েনা’ নামই ছিল বাড়িটির ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল— এই চার বছর। তিনি ২০০৫ সালে নাম বদলে দেন।
শাহরুখের কেনা সবচেয়ে দামি জিনিস ‘মন্নত’-ই এখনও পর্যন্ত। আরও একটি কারণ রয়েছে প্রাসাদোপম বাড়িটি কেনার। শাহরুখ দিল্লির বাসিন্দা ছিলেন। ‘কোঠি’ অর্থাৎ বাংলোতে বসবাস করার অভ্যাস দিল্লির মানুষদের। কিন্তু সবাই অ্যাপার্টমেন্টেই থাকেন মুম্বইতে। তিনি স্ত্রী গৌরীর সঙ্গে সে রকমই একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্ট-এ থাকতে শুরু করেছিলেন মুম্বই আসার পর। পরে ঘর বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শাশুড়ির কথাতে। কিনে ফেলেন ‘মন্নত’। বাড়িটি দেখামাত্রই মনে হয়েছিল, এটা এক্কেবারে দিল্লিওয়ালা কোঠির মতো দেখতে! তিনি ২০১৯-এর একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন এ কথা।
গৌরী বাড়ির প্রতিটি কোনা সাজিয়েছেন তাঁর মনের মাধুরী মিশিয়ে। তাঁর প্রিয় কিছু জিনিস রয়েছে। মান্নাতের অন্দরমহলে রয়েছে জেড পাথরের গণপতি, প্যারিস থেকে আনানো চার ফুট লম্বা এক জোড়া কালো ফুলদানি, রাধাকৃষ্ণের বিশাল ভাস্কর্য-সহ আরও কিছু ঘর সাজানোর জিনিস। গৃহকর্ত্রীর পছন্দের প্রথম সারিতে এগুলি সবই রয়েছে। পরবর্তীকালে শাহরুখের ইচ্ছাতে গৌরী এর ভিতরেই তৈরি করিয়েছিলেন একটি সিনেমা হল। একসঙ্গে ছবি দেখতে পারবেন ৪২ জন দর্শক বসে। তিনটি হিন্দি ছবির বিশাল পোস্টারে তার প্রবেশদ্বার সাজানো রয়েছে। ‘শোলে’, ‘রাম অউর শ্যাম’ এবং ‘মুঘলে আজম’ হলো ছবিগুলি। একাধিক শয়নকক্ষ ছাড়াও টেরেস, বাগান এবং ব্যক্তিগত কোয়ার্টার ছ’তলা বাংলো মন্নত-এ রয়েছে । ইতালিয়ান স্থাপত্য ও নব্য ধ্রুপদী উপাদানে সব কিছু সাজানো।