করোনাকালে ডেঙ্গির প্রভাব প্রায় একই রকম রয়েছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ আর অন্যদিকে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, সব নিয়ে আতঙ্কগ্রস্থ মানুষ। কিন্তু রোগ ভোগ তো থাকবেই। তাই বলে বিচলিত হয়ে পড়লে চলবে না এর থেকে বাঁচার উপায় আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বার করতে হবে। আর কোনো রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে সেরা উপায় হচ্ছে সেই রোগে আক্রান্ত হয় কিভাবে সেই বিষয়ে জানা। কেননা রোগের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান থাকলে তবেই তো পারবেন ঠিকভাবে সর্তকতা অবলম্বন করতে। ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায় এডিস মশা। ডেঙ্গুর জীবাণু সরাসরি কোন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্যান্য সুস্থ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে না। মশাই এর বাহক।
আর এই মশা কামড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি কখন থাকে তাই নিয়ে নানা ধারণা প্রচলিত আছে কিন্তু গবেষণা বলে ডেঙ্গুর মশা মূলত দিনের বেলা হুল ফোটায়।
নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করে দেখা গেছে সকাল ও বিকালে এই মশা বেশি কামড়ায়। ভোরের দিকে সূর্য উঠার পরের কয়েক ঘণ্টা এবং বিকালে সূর্যের আলো পড়তে শুরু করলে তখন থেকে সন্ধ্যা অবধি এডিস মশা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। কেননা দিনের বাকি সময় উজ্জ্বল আলো থাকে আর এই মশা উজ্জ্বল আলোর চেয়ে পড়ন্ত আলো বা আলো-আঁধারি বেশি পছন্দ করে। তাই সব থেকে বেশি সতর্কতার প্রয়োজন ভোরের বেলায় এবং গোধূলি বা সূর্যাস্তের আগে। অবশ্য রাতেও এই মশা কামড়াতে পারে। কৃত্তিম আলো যুক্ত অফিস, শপিং কমপ্লেক্স ইত্যাদি জায়গায় রাতের বেলাও আলোর পরিমাণ যথেষ্ট বেশি থাকে। তাই এ সমস্ত জায়গায় রাতেও ডেঙ্গু মশার প্রাদুর্ভাব আশ্চর্য কিছু নয়।
কিভাবে চিনবেন ডেঙ্গুর মশা এডিস!
ডেঙ্গুর মশা চিনতে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখুন। এই মশার গায়ের রং বাকি মশার তুলনায় বেশ ঘন কালো রঙের হয়ে থাকে। এডিস মশার পায়ে এবং দুপাশে সাদা রঙের ডোরাকাটা দাগ আছে। এছাড়াও এডিস মশার মাথার পেছনের দিকে কাস্তে আকৃতির একটি সাদা দাগ আছে যা দেখে এই মশাকে চেনা যায়।
কিভাবে বাঁচবেন এই মশার কামড় থেকে?
যেহেতু ডেঙ্গি মশা মূলত দিনের বেলা কামড়ায়। তাই এ সময় যথাযত সতর্কতা অবলম্বন করুন।
- দিনের বেলা পা খোলা রাখবেন না দরকার পড়লে মোজা পড়ুন।
- হাত ঢাকা জামা পড়ুন।
- বিশেষত বাচ্চাদের পা ঢাকা জামা পরান।
- ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙ্গাতে হবে।
- দিনের বেলা মশা যাতে না কামড়াতে পারে এইজন্য মশা তারায় এমন জিনিস গায়ে মাখতে পারেন।
- বাড়ির কোথাও জমা জল রাখবেন না। এমনকি বাথরুমেও না।
- দরজা-জানালায় মশা আটকানো নেট লাগাতে হবে।
- কোন কারণে সংক্রমণ হলে অবশ্যই নিজের নিজের চিকিৎসার চেষ্টা না করে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।