শিক্ষক যেমন ছাত্রকে শাসন করে তেমনই তাকে স্নেহ করা শিক্ষকের ধর্ম বলে মনে করা হয়। কিন্তু এই শিক্ষক ছাত্রকে সহবতের শিক্ষা দিতে গিয়ে যে চূড়ান্ত পথ বেছে নিলেন তাতে সকলেই হতবাক। উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর শাস্তি দেবার পদ্ধতির একটি হাড় হিম করা ভিডিও এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল। আর তাতে যা দেখা যাচ্ছে তার উপর নির্ভর করে তাকে আটক করেছে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই ফাঁপরে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক মহাশয়।
ঘটনাটা ঠিক কি হয়েছিল?
জানা যাচ্ছে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মির্জাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে ক্লাস টুয়ে পড়েন সনু যাদব। শিশু বয়সের কিছু কু-অভ্যাস এর দরুন এই ছাত্রের একদিন নিজের সহপাঠীদের গায়ে কামড়ে দেয়। এমনকি শিক্ষক বাধা দিতে গেলে সে তাকেও কামড়ে দেয়। এতেই ভীষণভাবে রেগে যান সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মনোস্থির করেন উচিত শিক্ষা দিতে হবে এই শিশুটিকে। ছাড়াতেই হবে এই বদ অভ্যাস। এমনটা ভেবে নেবার পর প্রধান শিক্ষক মনোজ বিশ্বকর্মা সেই ছাত্র সনু যাদব কে ভয় দেখাতে টানতে টানতে তাকে নিয়ে উপস্থিত হন স্কুল বিল্ডিং এর একেবারে উঁচুতলায়। বারংবার রেগে ছাত্রকে তার এই কুঅভ্যাসের কারণ জিজ্ঞাসা করতে থাকায় ভয় সনু কাঁদতে শুরু করে।
এতেই ধৈর্য হারিয়ে প্রধান শিক্ষক মহাশয় আরো রেগে যান। ছাত্রের একটি পা ধরে বারান্দা থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেয় তিনি। এই অভ্যাস ত্যাগ না করলে তাকে উচুঁ বারান্দা থেকে ফেলে দেওয়া হবে এমনটা বলে ভয় দেখাতে শুরু করে। মারাত্মক আতঙ্কিত হয়ে ছাত্রটি আরো জোরে কাঁদতে থাকে। ক্লাসের বাকি ছাত্ররা ভয় পেয়ে যায়, চিৎকার করতে থাকে। অবশেষে ক্লাস টু এর ওই ছাত্রকে তুলে এনে তার ক্লাসে ফের বসিয়ে দেয়।
কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোন ব্যক্তি বা ছাত্র এই ঘটনাটির ভিডিও বানিয়ে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আর পোস্ট করা মাত্র এই অমানবিক ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। চোখে পড়ে পুলিশের। পুলিশের তরফ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতার হন শিক্ষক।
পুলিশের জেরায় নিজের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে নেন শিক্ষক। কিন্তু তার দাবি সহবত শেখাতেই তিনি এমনটা করেছেন।
ছাত্রটির মা-বাবাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান এইভাবে শিক্ষা দিতে গিয়ে তাদের ছেলের প্রাণ সংশয় হতে পারতো বটে কিন্তু শিক্ষক এর সম্পূর্ণ অধিকার আছে ছাত্রকে শাসন করার। তাকে শাস্তি দেবার।