বয়স মাত্র নয়। আর এইটুকু বয়সেই সাক্ষী হতে হলো এক ভয়াবহ নৃশংস ঘটনার। কিন্তু বয়স এইটুকু করলেও কি হবে, প্রমাণ দিল সে চূড়ান্ত সাহসিকতা। রাজস্থানে ৯ বছরের এক মেয়ে নিজের মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে। মাকে বাঁচাতে গিয়ে মেয়েটি নিজে আহত হলেও জীবনের পরোয়া না করে মায়ের জীবন রক্ষা করে সে। ঘটনাটি চিতোরগড় জেলার। জেলার আজলিয়ার খেদা গ্রামের বাসিন্দা মেয়ে মনস্বীর এই বিচক্ষণ এবং সাহসী কাজের প্রশংসা সবার মুখে এখন।
সত্যনারায়ণ শর্মা, স্ত্রী প্রেম, মেয়ে মনস্বী এবং তার ছোট বোনের সাথে গ্রামের একটি বাড়িতে থাকতেন। বুধবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। অভিযোগ যে অশান্তি ধীরে ধীরে চরম আকার নেয়। এতটাই যে বিক্ষুব্ধ সত্যনারায়ণ তখন তার স্ত্রী প্রেমের শরীরে চাদর জড়িয়ে তার হাত-পা অবরুদ্ধ করে একটি ছুরি দিয়ে তার গলা কাটার চেষ্টা করেন। এ সময় মায়ের চিৎকার শুনে সেখানে পৌঁছায় নয় বছর বয়সী মনস্বী ও তার ছোট বোন।
এই দৃশ্য দেখে নয় বছরের মেয়েও বোঝে যে মায়ের জীবন বিপন্ন। কিন্তু সাহস হারায়নি সে। মা কে আগ্রাসী বাবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মনস্বী তার বাবাকে গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে ঠেলা দেয়। আচমকা ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় সত্যনারায়ণ। কিন্তু রাগে উন্মত্ত সত্যনারায়ণ একই ছুরি দিয়ে তার মেয়েকেও আক্রমণ করেন। এই হামলায় নয় বছরের ওই কিশোরীর আঙুল কেটে যায়। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে সত্যনারায়ণ সুযোগ পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এদিকে মনস্বীর ছোট বোন স্কুলের দিকে ছুটে যায় তার পিসিকে ডাকতে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সে তার পিসি এবং কিছু প্রতিবেশীর সাথে সেখানে পৌঁছে যায় সে। সেখানে পৌঁছে দেখে যে ছুরির আক্রমণে আহত হয়ে প্রেম অজ্ঞান হয়ে পড়ে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রেমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। মহিলা ও তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলে সত্যনারায়ণের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
তাদের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে, পুলিশ জানিয়েছে যে প্রেম খেদার একটি সরকারি স্কুলে খাবার রান্না করে, অথচ তার স্বামী কোনও কাজ করেন না। টাকার জন্য প্রায়ই সে তার স্ত্রীকে মারধর করত। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই দুজনের অশান্তি হতো। কিন্তু এই দিন বিবাদ চরমে পৌঁছলে বচসার জেরে সে তাঁকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে।