প্রেমিক যখন উন্মত্ত হয়ে ওঠে, তখন যে সে যেকোনো সীমায় অপরাধ করতে পারে এই ঘটনায় আবারও তা স্পষ্ট। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে একটি আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক দম্পতি সহ ৭ জন পুড়ে মারা গেছে। আহত আরো বেশ কয়েকজন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনা ঘটিয়েছে আর কেউ নয় ওই আবাসনে বসবাসকারী এক তরুনীকে বিয়ে করতে চাওয়া এক যুবক। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এই বিধ্বংসী আগুন লাগায় সে।
বিজয় নগর থানার ইনচার্জ তেহজিব কাজী জানিয়েছেন যে স্বর্ণবাগ কলোনির একটি আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত শুভম দীক্ষিত ওরফে সঞ্জয় (২৭) কে শনিবার ও রবিবারের মধ্যবর্তী সময়ে অর্থাৎ মধ্যরাতে লোহামান্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইন্সপেক্টর কাজী জানিয়েছেন, শুভম দীক্ষিত উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির বাসিন্দা এবং কিছুদিন ধরে ইন্দোরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।
এদিকে, একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যাতে শুভম দীক্ষিতকে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকতে দেখা যায় এবং শহরের সরকারি মহারাজা যশবন্তরাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার এক হাত ও পা থেকে রক্তপাত হচ্ছে এমনটাও দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন ইনচার্জ বলেন, আগুন লাগিয়ে ৭ জনকে হত্যার অভিযুক্ত শুভম দীক্ষিত লোহামন্দি এলাকায় আত্মগোপন করেছিল। তাকে অ্যারেস্ট করতে পুলিশের দল সেখানে পৌঁছলে তাদের দেখে পালানোর চেষ্টা করলে রাস্তায় ডিভাইডারে লাফিয়ে পড়ে আহত হন অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, অগ্নিকাণ্ডের পর পলাতক শুভম নিরঞ্জনপুরে তার বন্ধুদের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল এবং পরে লোহামান্ডি এলাকায় পৌঁছেছিল। আসামিকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ আধিকারিকদের মতে, শুভম দীক্ষিত এক তরুণীকে বিয়ে করার ব্যর্থ চেষ্টার পরে প্রতিশোধ নেওয়ার অভিপ্রায়ে স্বরণ বাগ কলোনীর একটি আবাসিক ভবনের পার্কিং লটে পার্কিং করা তার স্কুটারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল শুক্র ও শনিবার মধ্যবর্তী রাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, পরে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কর্মকর্তাদের মতে, এই আগুন আবাসনে ছড়িয়ে পড়লে দম্পতিসহ সাতজন নিহত হয়, এবং নয়জন আহত হয়েছেন। পুলিশ শুভম দীক্ষিতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা 302 (খুন) এবং 436 (একটি ভবনে আগুন দেওয়ার উদ্দেশ্যে দাহ্য পদার্থের ব্যবহার) এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্ত শুভম দীক্ষিত ছয় মাস আগে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক ভবনের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়াটে হিসেবে থাকতেন এবং ওই ভবনে বসবাসকারী এক মহিলাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ওই মহিলার বিয়ে অন্যত্র স্থির করা হয়েছিল, যার কারণে দীক্ষিতের রাগ হয়। পুলিশ জানিয়েছে বিয়ের ইস্যু ছাড়াও, দীক্ষিত এবং সংশ্লিষ্ট মহিলার মধ্যে কয়েকদিন আগে প্রায় ১০,০০০ টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। এরপরে শুভম দীক্ষিত অন্যত্র বসবাস করা শুরু করে। তারপরে এই ঘটনা। তদন্তাধীন পুলিশ অফিসার সবটাই খতিয়ে দেখছেন।