নিয়তির নির্মম পরিহাস! বাবার শ্রাদ্ধক্রিয়া শেষে বাড়ি ফেরার পথেই প্রাণ হারালো পাঁচ ভাই। বাবার শ্রাদ্ধের দিনে পাঁচ ছেলের লাশ পৌঁছল বাড়িতে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায়।
গত ৩০ জানুয়ারি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালের নিকটবর্তী এক গ্রাম হাসিনাপাড়ার বসবাসকারী সুরেশ চন্দ্রের মৃত্যু হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন তাঁর নয় সন্তান। জানা গেছে সেই সময় চারদিকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। ওই সময় আট ভাইবোন বাবার শ্রাদ্ধ -এর রীতি অনুযায়ী কিছু নিয়ম সারছিলেন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পাশে বসে। এরপর চকরিয়ায় রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগামী মিনিট্রাকের ধাক্কায় সুরেশবাবুর পাঁচ ছেলের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন সুরেশ চন্দ্রের আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে।
ঘটনাস্থলেই মারা যান সুরেশ চন্দ্র শীলের ছেলে অনুপম শীল (৪৩), নিরুপম শীল (৪০), দীপক শীল (৩৫) ও চম্পক শীল (৩০)। জখম অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান আরেক ছেলে স্মরণ শীল (২৬)। জখম হয়েছেন সুরেশ চন্দ্রের মেয়ে হিরা রানী শীল (৩৮), ও আরো দুই ছেলে রক্তিম শীল (৩৩) ও প্লাবন শীল। হীরা শীলের একটি পা মালুমঘাট খ্রিষ্টান হাসপাতালে চিকিৎসার সময় বাদ গিয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল ও ও মৃতের পরিবারের ভয়াবহ শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দুপুরে সুরেশচন্দ্র শীলের বাড়িতে হৃদয় বিদারক এক দৃশ্য দেখা যায়। তাঁর মারা যাওয়ার দশ দিন কেটে যাওয়ার জন্য শ্রাদ্ধ কাজের আয়োজন করা হয়। তাই বাড়ির উঠোনে টাঙানো ছিল শামিয়ানা। আর সেই শামিয়ানার নিচে কাপড় দিয়ে মুরে শুইয়ে রাখা সুরেশবাবুর চার ছেলের লাশ। লাশগুলোর পাশে বসে আছে তাদের মা, অর্থাৎ সুরেশ চন্দ্র শীলের স্ত্রী মানু বালা। শোকে কার্যত ‘পাথর’ হয়ে গেছেন তিনি। কথা বলতে পারছেন না, কাদতেও পারছেন না, এতটাই শোকাহত তিনি। এই মর্মান্তিক দৃশ্যে বাক্যহারা পরিজনেরা।