শীতকালে স্নানের জন্য অনেকেই জল গরম করে নেয়। একই ভাবে এই বাড়িতেও রান্না ঘরে রাখা ছিল স্নান করার ফুটন্ত গরম জল একটি বালতির ভিতর। কিন্তু চার বছরের অবোধ শিশু সেটা বুঝে উঠতে পারেনি। খেলতে খেলতে নিজের মাকে খুঁজতে খুঁজতে পৌঁছে যায় রান্নাঘরে। আর তাতেই হয় চূড়ান্ত পরিণতি।
এই চূড়ান্ত ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম (Chittagong)। কাজিমুল হাবিব নামের ৪ বছরের ওই শিশুটির গরম জলের কারণে শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে দগ্ধ গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। গত রবিবার দুপুরে হয়েছিল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি। তিনদিন হাসপাতালে পোড়ার চিকিৎসা হওয়ার পর অবশেষে বুধবার ভোরে সে মারা যায়।
কিন্তু কিভাবে হল এমন মর্মান্তিক ঘটনা? সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, যেদিন এই ঘটনাটি ঘটে তার আগে শিশুটি তার বাবার সঙ্গে খেলা করছিল। তার মা সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিল না, শৌচাগারে ছিল। শিশুটি খেলতে খেলতে তার মাকে খুঁজতে হঠাৎই রান্নাঘরে যায়। সেখানেই রাখা ছিল স্নানের জন্য গরম জলের বালতি। বুঝতে না পেরে সেই গরম জলের বালতিতে হাত দেয় ছোট্ট কাজিমুল। আর গরম লাগায় হাত ঝটপট করতে গিয়ে সাথে সাথেই সেই বালতিটা তার হাতের ধাক্কায় মেঝেতে পড়ে যায়। সেই জলেই পরে গিয়ে ফুটন্ত গরম জলের তাপে ঝলসে যায় ছোট্ট কাজিমুল। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোক তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা শিশুটিকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না, বুধবার থেমে গেল কাজিমুলের লড়াই। মৃত্যু হল শিশুটির।
কাজিমুলের বাবা মা ইমরান হোসেন ও সৈয়দা তিশা আখতার চট্টগ্রামের বুড়িশ্চর বাজার এলাকার বাসিন্দা। এর আগে তারা সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেই ছিলেন। গত নভেম্বরে তাঁরা বাংলাদেশে (Bangladesh) আসেন। আচমকাই এমন মর্মান্তিক ঘটনায় তাদের জীবন ছারখার হয়ে গেল।
বুধবার দুপুরে প্রাণহীন কাজিমুলের দেহ নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন তার শোকস্তব্ধ বাবা মা। কাজিমুলের মামা সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছে, মা’কে রান্নাঘরে খুঁজতে গিয়ে না বুঝেই ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে ছোট্ট ছেলেটি। তার বাবা সেই সময় অন্য ঘরে ছিল। চোখের নিমেষে ঘটে যায় ঘটনাটি।