কখনও যদি এমন মানুষকে সৎকার করা হয় যার মৃত্যুর কোনও প্রমানই পাওয়া যাবে না, এবং কারও সামনে নেই বলে তিনি মারা গেছে ধরে নেওয়া হবে, তখন কেমন হবে ব্যাপারটা?
সাবিত্রী চৌধুরী শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ফাঁসিদেওয়া অঞ্চলের রাঙ্গাপানি স্টেশনপাড়ার বাসিন্দার ক্ষেত্রে একদম এই ঘটনাই ঘটেছে। বিগত বছর ১৫ ধরে তিনি নিখোঁজ। কোনও বাসিন্দা যদি ১২বছর ধরে নিখোঁজ থাকে তাকে মৃত বলেই ধরে নেওয়ার একটা ব্যাপার রয়েছে আমাদের দেশে আর ইনি তো ১৫ বছর নিখোঁজ। হয়তো সাবিত্রীর পরিবার এবং তাঁর গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এই কারণেই তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়। তাই কালারাম বিষ্ণুপুর শ্মশানঘাটে তাঁর মাটির মূর্তি বানিয়ে দাহকাজ করা হল আজ, রবিবার।
যদিও একটা প্রেক্ষাপট এর রয়েছে। সাবিত্রীর বাবা জয়লাল চৌধুরীর দীর্ঘ ২৭ বছর আগে মৃত্যু হয়। সাবিত্রী দেবী তার পর থেকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এবং নিখোঁজ হন বেশ কয়েকবার। আবার বাড়িও ফিরে আসেন নিখোঁজ হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে। তবে তিনি বছর ১৫ আগে নিখোঁজ হওয়ার পরে আর কখনই বাড়িতে ফিরে আসেননি।
সাবিত্রী দেবীর তিন পুত্র। তারা মায়ের ছায়া থেকে বঞ্চিত দীর্ঘ বেশ কিছু বছর। কখনও মা আর ফিরে আসেননি বলে একটা কষ্ট তাদের মনের মধ্যে বাসা বেঁধেছিল। কিন্তু বছরের পর বছর এভাবে চলতেও দেওয়া যায়না। তাঁরা আলোচনাও করেন গ্রামবাসীর সঙ্গে। এ নিয়ে গ্রামে একটি সভাও বসানো হয়। সেই সভাতেই ঠিক হয়, মৃতই ভেবে নিতে হবে সাবিত্রীদেবীকে এবং তাঁর মূর্তি বানিয়ে দাহকাজ করা হবে তাঁর আত্মার শান্তির জন্য। রবিবার কালারাম শ্মশানঘাটে সেই কথামতো সাবিত্রীর তিন ছেলে দাহকাজ করেন। অবশেষে মাটিতেই মিশে গেলেন মাটির সাবিত্রীদেবী!