সারারাত জেগে কাটানোর পর সারাদিনের অমানুষিক ক্লান্তি! সদ্য মা হয়েছেন যারা তাদের কষ্ট টা সত্যিই মারাত্মক। অনেক সময় দেখা যায় তারা তাদের সন্তান কে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু তাতে কি ক্ষতি হবে সন্তানের? উত্তর হ্যাঁ হবে, প্রগতি ময়দান থানা এলাকার এই ঘটনা তারই প্রমাণ। এই মহিলার সদ্যজাত সন্তান মাত্র ২৩ দিনের । কিন্তু এই শিশুর খুব মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু ঘটেছে তার মুখে বালিশ চাপা পরে যাওয়ায়।
গতকাল দুপুরে যখন সেই মহিলা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তখন এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় ওই শিশুকে নিয়ে আসা হয় এন আর এসে, কিন্তু রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ ওই শিশুর মৃত্যু হয়। সদ্যজাতর মৃত্যুকে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে গণ্য করেছে। শিশুটির শ্বাস আটকে মৃত্যু হয়েছে। গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া । শুধুই কি দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনও ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে এর পেছনে, তদন্তে পুলিশ নেমেছে।
সদ্যোজাত শিশুটি প্রগতি ময়দান থানা এলাকার খানাবেড়িয়ায় মামার বাড়িতে ছিল। পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে অসতর্কাবশত মায়ের হাত লেগে ঘুমন্ত শিশুর ওপর বালিশ চাপা পড়ে গতকাল দুপুরে। প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় বাপের বাড়িতে আসেন অপর্ণা দাস ২৩ দিনের বাচ্চাকে নিয়ে। মধ্যমগ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। এদিন শিশুকে পাশে নিয়ে শুয়েছিলেন মা অপর্ণা বাপেরবাড়িতেই। তাঁর চোখ লেগে এসেছিল ক্লান্তিতে। কিন্তু ঘুম ভেঙে গিয়েছিল সন্তানের। হাত পা ছুড়ে ছটফট করতে থাকে বাচ্চাটি । তাকে ঢাকা ছিল একটি চাদর দিয়ে। অপর্ণার পরিবারের দাবি, যখন তাঁদের মেয়ের ঘুম ভাঙে, তখন দেখেন প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বাচ্চাটির। মুখের ওপর একটি বালিশ পড়ে ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সঙ্গে সঙ্গে তাকে। শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। প্রাথমিকভাবে সদ্যোজাতর শ্বাস আটকেই মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ।
পরিবারের এক সদস্যের কথায়, “ একই সঙ্গে শুয়েছিল ওরা দু’জনেই। আমরা ভেবেছিলাম, একটু বিশ্রাম নিয়ে নিক ও বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে। কিন্তু চোখ লেগে গিয়েছিল ওর। একটা সময়ে ওই বাচ্চা কোলে নিয়ে আসে হন্তদন্ত হয়ে। তখন প্রবল শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বাচ্চাটার। আমরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সব শেষ তার আগেই।” কার্যত কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন মা সন্তানকে হারিয়ে। সংজ্ঞা হারাচ্ছেন মাঝেমধ্যেই। শোকস্তব্ধ গোটা পাড়া ২৩ দিনের এক বাচ্চার এই মর্মান্তিক পরিণতিতে।