রাজস্থানের জয়পুর থেকে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। গত মঙ্গলবার শাস্ত্রী নগরের মক্কা মসজিদ এলাকায় এক নাবালক বাচ্চা কে রাস্তায় হামাগুড়ি দিয়ে লোকের কাছে সাহায্য চাইতে দেখা যায়। সে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন চাইল্ড হেল্পলাইনে ফোন করে এই ঘটনা জানান। শিশুটির শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন ছিল। নাবালক তার সাথে নৃশংসতার কথা সেখানকার মানুষদের বললে মানুষের চোখে জল চলে আসে।
শিশুটি জানায়, তাকে জয়পুরে নিয়ে এসেছিল তার বাবা মার পরিচিত ব্যাক্তি। তারা এখানে নিয়ে এসে তার সাথে ভয়ানক খারাপ ব্যবহার করত। প্রতিদিন তাকে মারধর করত। মদের নেশায় স্বামী স্ত্রীর সামনে সন্তানের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ পর্যন্ত করত। প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়। সেই সময় স্পীকারে জোরে গান বাজিয়ে দেওয়া হতো যাতে নাবালকের চিৎকারের শব্দ আশেপাশের কেউ শুনতে না পায়। একবার বাচ্চাটি পালানোর চেষ্টা করলে তার পায়ের তলা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নির্যাতিত জানান, সাত মাস আগে তার পরিচিত রুহি পারভীন (২৫) ও মোহাম্মদ রিয়াজ (২৭) তাকে বিহার থেকে জয়পুরে কাজের জন্য নিয়ে আসে। তাকে চুরি বানানোর কাজে লাগানো হয়। সকাল সাতটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চুড়ি বানাতেন। এমনকি ক্ষুধার্ত অবস্থায় তাকে খাবারও দেওয়া হয়নি। তাকে শুধু বিস্কুট দেওয়া হয়েছে জল দিয়ে খেতে। এমনকি তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলেও দম্পতি ওই বাচ্চাটিকে নির্দয়ভাবে মারধর করত। দম্পতি তাকে তার বাবা-মাকে বলতে বাধ্য করে যে সে ভালো আছে। কোন সমস্যা নেই। একবার সে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এতে রেগে গিয়ে ওই দম্পতি তার পায়ের তলা পুড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে সে ঠিকমত হাঁটাচলাও করতে পারতো না।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত রুহি পারভীন তাকে বারান্দা পরিষ্কার করতে পাঠালে সে সাহস করে পালিয়ে যায়। সে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না তাই হামাগুড়ি দিয়ে পাশের বারান্দায় পৌঁছে যায়। তারপর ওখান থেকে যেই রাস্তার কাছে পৌঁছতে সক্ষম হয় তখনই সে বেরিয়ে আসে। শিশুটি রাস্তার লোকজনের কাছে কাতর আবেদন করেছিল তাকে বাঁচাতে, না হলে মহিলাটি তাকে মেরে ফেলবে।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে অভিযুক্ত মহিলা রুহিকে আটক করে। তবে তার স্বামী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। যে ঘরে শিশুটিকে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে চুড়ি তৈরির জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শিশুটি বিহারের হায়াঘাট বিলাসপুর দরভাঙ্গার বাসিন্দা।