আশি বছরের দাম্পত্য। একসাথে পার করেছিলেন সুখ-দুঃখের দীর্ঘ সময়। দেখেছেন জীবনের ওঠাপড়া। আর এই দম্পতির জীবনের অবসানও ঘটল একই দিনে। স্বামীর মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন স্ত্রী। একসাথে দুনিয়াকে চির বিদায় জানিয়ে পারি দিলেন অনন্তের পথে। একই চিতায় হলো তাদের সৎকারও।
সূত্র অনুযায়ী, রাজস্থানের আজমের জেলার শ্রীনগরের কালেড়ি গ্রামে বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ দম্পতি। বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান ১০৫ বছর বয়সী ভৈরু সিং রাওয়াত। আশি বছরের দাম্পত্য যার সাথে তাকে পরপারের যাত্রায় ছেড়ে দিতে পারেনি তাঁর ১০১ বছর বয়সী স্ত্রী হিরা দেবীও। স্বামীর মৃত্যুর খবর জানার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাণ রাখেন তিনিও। অবশ্য মৃত্যুর আগে তাদের দাম্পত্যও সবসময় অনুপ্রাণিত করতো প্রতিবেশীদের। সকলেই বলতো ভৈরু সিং আর হিরা দেবীর দাম্পত্য আজকালকার দিনে দেখা যায় না। এক গভীর টান ছিল তাদের মধ্যে।
সহজ সরলভাবেই জীবন কাটিয়েছেন এই স্বামী-স্ত্রী। চাষবাস করে এবং বয়স হলে মুদি দোকান দিয়ে দিব্যি দিন গুজরান হচ্ছিল তাদের। এইভাবেই সুখে দুঃখে কাটছিল তাদের দিন। কিন্তু বছর ছয়েক আগে আচমকাই তাদের জীবন পাল্টে যায় যখন পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন ভৈরু সিং। বিছানায় শুয়ে এত বছর রোগভোগের পর অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন স্ত্রী হিরা দেবী এবং সেখান থেকে কোথাও চলে যান। যখন তার খোঁজ মেলে দেখা যায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন তিনিও।
বয়স্ক এই স্বামী স্ত্রীর মৃত্যুর পরের দিন দুজনের শব দেহ একেবারে মালা বেলুনে সাজিয়ে শোভাযাত্রা করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা হয়। বাজানো হয় গান। এ যেন তাদের পরপারে মিলিয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা। একই চিতায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ওই বর্ষীয়ান স্বামী স্ত্রীর। তাদের মুখাগ্নি করেন তাঁদের ৭০ বছর বয়সী ছেলে শঙ্কর। তাদের বিদায় জানতে উপস্থিত ছিল গ্রামের প্রচুর মানুষ।