গাছ বাঁচাতে ১৯৭৩ সালের ‘চিপকো আন্দোলন’ নজর কেড়েছিল সারা বিশ্বের। কিন্তু আবারও মধ্যপ্রদেশে জঙ্গল বাঁচানোর চেষ্টায় মধ্যপ্রদেশের ছতরপুর জেলার স্থানীয় দের আন্দোলন শিরোনামে উঠে এসেছে। গত ১৭ বছর ধরে মধ্যপ্রদেশে ঘন জঙ্গল কে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশপ্রেমী এবং এই জেলার স্থানীয় বাসিন্দারা।
গাছ বাঁচানোর মরিয়া আন্দোলনে প্রাণপন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সেই ২০০৪ সাল থেকে।
দিল্লি থেকে ৬৫০ কিমি দূরে মধ্যপ্রদেশের ছতরপুর জেলায় রয়েছে বক্সওয়াহা জঙ্গল । ২০০৪ সালে একটি অ্যাংলো-অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা যার নাম রিও-টিন্টো তারা এই অঞ্চলে হিরের সন্ধান পায়। ২০১০ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে হিরে উত্তোলন করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় সংস্থাটি।
কিন্তু বক্সওয়াহার জঙ্গলের মোট ৯৭১ হেক্টর পরিমাণ জমিতে হিরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু হিরে উত্তোলনের করতে গেলে অন্তত ২ লাখ গাছ কাটা পড়ত। আর এই জঙ্গলের কাছেই রয়েছে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্যও পরিচিত পান্না জাতীয় উদ্যান। পাশাপাশি এই অঞ্চল খরাপ্রবণ। আর এই হিরের খনিতে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ জলেরও। তাহলে এই জঙ্গলে পশু পাখির কি হবে?
গাছ কাটার ফলেই ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয় ছিল না। আরও একটি বিষয় আন্দোলনকারীদের ভাবিয়ে তুলেছিল। এই অঞ্চল । পড়বে। এই বিপুল পরিমাণ জল যদি হিরের কাজে লাগানো হয় তা হলে তার প্রভাবও জঙ্গলের জীব এবং আশাপাশের মানুষের উপর পড়বে।
এই কারণে জঙ্গল বাঁচানোর জন্য শুরু হয় প্রাণপন আন্দোলন। যোগ দেন স্থানীয়রাও। এগিয়ে আসে নানা সমাজসেবী সংগঠন। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালে পিছু হটে সংগঠনটি।
কিন্তু ২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। পুনরায় এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ফলে আন্দোলন এখনও চলছে। হিরে এখনও উত্তোলন করা যায়নি। কিন্তু এই হিরের লোভে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করার প্রয়োজন কি আদৌ রয়েছে?