রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে বাড়ির সকলেই। শোওয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে স্বামী স্ত্রী দুজনেই ঘুমিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি স্বামী ঘুমিয়ে গেছেন। যদিও স্ত্রী তখনও জেগেই ছিল। সে সময় মোবাইল এ চ্যাটিং এ ব্যস্ত স্ত্রী। একবিছানায় পাশাপাশি শুয়ে স্বামীর পাশে, তবুও স্ত্রী কি করছে গোপনে তা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি স্বামী। স্ত্রী যে অনেকের সাথেই ফোনে কথা বলতেন তা স্বামী জানতেও পারেননি কখনই। যদিও বিয়ের আগের প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ রাখতো স্ত্রী, সে ব্যাপারে কিছুই জানতে পারেননি তিনি। প্রেমিককে একটু রাত হতেই ফোন করলেন স্ত্রী। ফোনে কথা বলাতেই থেমে থাকেননি স্ত্রী। একেবারে নিজের ঘরে ডেকে নিলেন প্রেমিককে। ঘুমন্ত স্বামী তখন কিছুই জানেননা।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুরাতন রাঙাইপুর গ্রামে বাড়ি আজমল হোসেনের বাড়িতে। মাস দুয়েক আগের ২৩ বছরের আজমলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে ১৯ বছরের মারিনা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই আজমল খেয়াল করতেন যে তাঁর স্ত্রী মারিনা সব সময় ফোনে ব্যস্ত থাকতেন। অনেকবার বারণ সত্বেও শোনেননি মারিনা। আজমল বৃহস্পতিবার রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এর পরই তাঁর প্রেমিক আবু কালামকে মারিনা ডেকে পাঠান। মাঝরাতে বিয়ে হয়ে যাওয়া প্রেমিকা ডাকতেই তাঁর শ্বশুরবাড়িতেই হাজির হন আবু। তখন আজমল বিছানাতেই ঘুমাচ্ছিলেন। ঘুনাক্ষরেও টের পাননি তিনি স্ত্রীর প্রেমিকের আসার বিষয়টি। পরিবারের বাকি সদস্যরাও অন্ধকারে ছিলেন।
মারিনার তাঁর প্রেমিকের সাথে মেলামেশা করতে বাধা হয়েছে দাঁড়িয়েছিল আজমল। তাই বাধা দূর করতে স্বামী আজমলকে খুনের চক্রান্ত করেছিলেন মারিনা। প্রেমিক আবুকে সে জন্যই ডেকে পাঠায়। প্রেমিক ও স্ত্রী মিলে বৃহস্পতিবার রাতে দড়ি জড়িয়ে দেয় স্বামীর গলায়। আজমলকে খুন করে ২ জনে গলায় ফাঁস লাগিয়ে। তার পর তাঁর প্রেমিক পালিয়ে যায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মারিনা পরিবারের সবাইকে জানায় আজমল উঠছে না। পরিবারের সকলের এই ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ হয় যে রাতে সুস্থ থাকা ছেলে সকালে উঠছেনা, কারণ কি? আজমলের গলাতেও তাঁরা দাগ দেখতে পান। মারিনাকে এর পর চেপে ধরতেই খুনের কথা স্বীকার করে সে। তখনই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে খুন করার বিষয়টি উঠে আসে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ এসে আজমলের দেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিককে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।