বিদেশে যেতে চান। ইচ্ছা আছে বাইরের দেশে চাকরি করতে যাওয়ার, অথবা অনুমোদন চান বাইরের কোনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার। এরোপ্লেন গুরুদ্বারায় মানত করলে হতেও পারে আপনার মনস্কামনা সফল। জলন্ধরের কাছে শহীদ বাবা নিহাল সিং গুরুদ্বারা (Shahid Baba Nihal Sing Gurudwara) এমন একটি গুরুদ্বারা যেখানে প্রার্থনা করলে হয়ে যেতে পারে আপনার বিদেশের ভিসা মেলার স্বপ্ন পূরণ। বিদেশে যেতে ইচ্ছুক মানুষের মধ্যে এই গুরুদ্বারা বিশেষ ভাবে জনপ্রিয় ‘এয়ারপ্লেন গুরুদ্বারা’ নামে বা ‘ হাওয়াই জাহাজ গুরুদ্বারা’ নামে। কেন এই গুরুদ্বারার নাম এমন জানেন? কেননা বিদেশ যাওয়ায় মনোবাসনা পূরন করতে এখানে একটি বিশেষ পদ্ধতি তে প্রার্থনা করতে হয়। খেলনা এয়ারপ্লেন সাথে নিয়ে। এবং সেটি এই গুরুদ্বারাতে রেখে যেতে হয়। এই ভাবেই জলন্ধর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের তালহানের ছোট্ট গ্রামের এই গুরুদুয়ারা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে।
কেন এই বিশ্বাস ভক্তদের মধ্যে গড়ে উঠল কেউ জানে না সঠিক ভাবে। কেউই সেই ভাবে বলতে পারে না এই খেলনা এয়ারপ্লেন রেখে দিয়ে যাওয়ার এই উদ্ভট ধারণাটি প্রথমে কে নিয়ে এসেছিল বা কীভাবে এই সব শুরু হয়েছিল। শোনা যায় একবার কিছু তরুণ ছাত্র বিদেশের স্টুডেন্ট ভিসা চেয়ে প্রার্থনা করার জন্য এই খেলনা এয়ারপ্লেন রেখে যাওয়ার পদ্ধতিটি ব্যবহার করেছিল। আর কাকতালীয় ভাবে কিছুদিনের মধ্যেই বিদেশের ইউনিভার্সিটি থেকে তাদের সকলের ভিসা মঞ্জুর হয়ে যায়। তাদের এই ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে আশে পাশে।
এর পর থেকেই এই গুরুদুয়ারার নাম চাউর হয়ে যায়। বিদেশে যাওয়ার পাসপোর্ট ভিসা না মঞ্জুর হলে মানুষ এখানে এসে খেলনা খেলনা উড়োজাহাজ দিয়ে মানত করে যায়। বলা হয় যে বেশিরভাগেরই মনস্কামনা পূর্ন হয়ে যায়।
এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এই গুরুদ্বায়ারার ব্যবস্থাপক বলভির সিং বলেন, “আমরা জানি না কিভাবে এটি শুরু হয়েছিল। আমরা যদিও বিদেশ যাওয়া মনস্কামনা পূরনের এই কুসংস্কারকে সমর্থন করি না। কিন্তু আমরা মানুষকে তাদের মনের ইচ্ছা নিয়ে প্রার্থনা করতে বাধা দিতে পারি না। আমরা শুধু তাদের পথ দেখাতে পারি কিন্তু কেউ যদি এই ধরনের জিনিসে বিশ্বাস করে তবে তা তাদের ব্যাপার।”
এই গুরুদ্বায়ারায় প্রার্থনা কক্ষের ভেতরে সব সময়ই চোখে পড়ে অন্তত ৮০ থেকে ১০০ টি খেলনা উড়োজাহাজ। একেক সময় এখানে খেলনা উড়োজাহাজের পাহাড় জমে যায়। এমনকি এই গুরুদ্বায়ারার আশে পাশের সব দোকানে বিক্রি হয় খেলনা উড়োজাহাজ। অনেক খেলনা জমে গেলে এই গুরুদ্বায়ারায় প্রার্থনা করতে আসা বাচ্চাদের হাতে সেগুলো দিয়ে দেওয়া হয়। অনেক বছর ধরে চলে আসা এই রীতি শহীদ বাবা নিহাল সিং গুরুদ্বারাকে উড়োজাহাজ গুরুদ্বারার উপাধি দিয়ে দিয়েছে।