Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

ভারতের সর্বোচ্চ সাহসীকতার পদক, ‘পরম বীর চক্র’। এই বীর চক্রের পেছনে রয়েছেন এক মহিলার অবদান

পরমবীর চক্র ভারতের সর্বোচ্চ বীরত্বের পদক। ভারতের সেনাবাহিনীর এবং অফিসারদের যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাহস ও দুঃসাহসীকতার পরিচয় এবং আত্মত্যাগ প্রদর্শনের স্বীকৃতস্বরূপ এই পদক দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি? এই পদকের রূপরেখার পেছনে রয়েছে এক মহিলার চিন্তা ভাবনা।

এই সাহসীকতার পদক মরণোত্তরও প্রদান করা হয়। এখনও অবধি ভারতে ২১ জন পরম বীর চক্র প্রাপকের মধ্যে ১৪ জন কেই এই পদক মরণোত্তর দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন ভারতবর্ষে এই পদকও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সামরিক সম্মান ভিক্টোরিয়া ক্রসের পরিবর্তে চালু করা হয়। এই পরমবীর চক্রের স্থান ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নের ঠিক পরেই।

this women behind Indias highest Gallantry Medal The Param Vir Chakra

ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল হীরা লাল অটলকে ভিক্টোরিয়া ক্রসের বদলে একটি পদক তৈরী করার দায়িত্ব দিলেন যা ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ সাহসিকতার সন্মান স্বরূপ দেওয়া হবে। মেজর জেনারেল হীরা লাল অটলের অনুরোধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শিখ রেজিমেন্টের এক অফিসার বিক্রম খানোলকার এর স্ত্রী সাবিত্রী খানোলকার এই পরমবীর চক্রের তৈরী করেন।

this women behind Indias highest Gallantry Medal The Param Vir Chakra

সাবিত্রী খানোলকারের আসল নাম হল ইভ ইভোনে ম্যাডে দে মারোস। তিনি আদপে একজন সুইস নাগরিক হলেও ভারতীয় সেনা অফিসার বিক্রম খানলকরের সাথে বিবাহের পরে নাম বদলেছিলেন। এবং হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন। ভারতীয় কালচার নিয়ে সাবিত্রী দেবীর অতুল আগ্রহ ছিল। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে তিনি ডিগ্রী লাভ করেন।

সাবিত্রি খানলকার একটি বেগুনি রঙের ফিতা দিয়ে ব্রোঞ্জের একটি পদক ডিজাইন করেন। পদকটির উপরে রাখেন ইন্দ্রের বজ্রের চারটি প্রতিলিপি নকশা করেন।

ভারতীয় সংস্কৃতিতে বজ্রের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, ভগবান ইন্দ্র একবারে বৃত্রসুরকে পরাস্ত করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী একটি অস্ত্রের সন্ধানে মহর্ষি দধিচীর কাছে গিয়েছিলেন। মহর্ষি দধিচি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং অসুর পরাস্ত করার অস্ত্রটি তাঁর হাড় দিয়ে তৈরি করা হয়। এই অস্ত্রটিকে বজ্র নাম দেওয়া হয় এবং ইন্দ্র বৃত্রাসুরকে পরাস্ত করতে বর্জ্র।

এই পৌরাণিক উপাখ্যান কে কেন্দ্র করেই পরম বীর চক্রের নকশা করেন সাবিত্রি দেবী। মহর্ষি দধিচীর যেমন নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তেমনই যে সমস্ত বীর সৈনিক নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসীকতার পরিচয় দেয় তাদের প্রদান করা হয় এই সাহসীকতার পদক।

ব্রোঞ্জের তৈরী এই পদকটির ব্যাস ১.৩৭৫ ইঞ্চি (৩.৪৯ সেমি)। বৃত্তাকার এই পদকটির মাঝখানে রাষ্ট্রীয় প্রতীক অশোক চক্র এবং তার চারদিকে চারটি বজ্র খোদিত রয়েছে। পদকের পেছনের দিকে রয়েছে পদ্মফুল এবং হিন্দী ও ইংরেজি ভাষায় পরমবীর চক্রে লেখাটি খোদিত। একটি ৩২ মিলিমিটার (১.৩ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্যের একটি গোলাপী রঙের ফিতের সাথে পদকটি আটকানো থাকে।

Related posts

মৌমাছির মরণ কামড় -এ মৃত সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ! আতঙ্ক দুর্গাপুরে

News Desk

তালিবান প্রাণে মেরে ফেললেও মন্দির ছেড়ে পালাতে নারাজ আফগানিস্তানের হিন্দু পুরোহিত

News Desk

গিনিস বুকে নাম উঠল বিশ্বের সবচেয়ে দামি আলুভাজার! জানেন কত দাম?

News Desk