আইনের রক্ষাকর্তাই আইন ভঙ্গকারী। ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটপাট (Robbery) চালানো হয়েছে। আর সেই লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে খোদ আইন রক্ষাকারী পুলিশেরই (Police) বিরুদ্ধে। এমনকী ইতিমধ্যেই ডাকাতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে মোট তিনজন পুলিশ কর্মীকে। এমন ঘটনা শোরগোল ফেলেছে মালদহ (Malda) জেলার পুলিশ মহলে।
মঙ্গলবার গভীর রাতের দিকে মালদহের কালিয়াচক থানার কয়েকজন পুলিশ মিলে ৫২ বিঘা এলাকার লেবার কমিশনার এসরাউল শেখের বাড়িতে ডাকাতি করে বলে অভিযোগ। এসরাউলের অভিযোগ প্রায় ৩৪ ভরি সোনা ও বাড়িতে রাখা এসরাউলের কর্মচারীদের বকেয়া টাকা বাবদ রাখা প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা অনৈতিক ভাবে তুলে নিয়ে গেছেন কালিয়াচক থানার পুলিশকর্মীরা। শুধু তাই নয়, ভীষণ খারাপ আচরণ করা হয় তাদের সাথে। অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা হয় তাদের। বাড়ির মহিলাদের উপর পর্যন্ত নির্যাতন চালানো হয়।
গৃহকর্তা এসরাউলের আরও অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে আসার কোনো কারণ ছিল না পুলিশের কেননা তার বিরুদ্ধে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাহলে কোন যুক্তিতে তাঁর ঘরে ঢুকল কিছু পুলিশ। কি করে তারা লুঠপাট চালান। এমন ঘটনার পর ভীষণই আতঙ্কে রয়েছেন এসরাউলের পরিবার। পুলিশের এমন কর্ম কাণ্ডে শুধু এসরাউলরাই নন, বিক্ষুব্ধ গোটা গ্রাম।
ওই ব্যবসায়ীর বয়ান অনুযায়ী, ঘড়িতে তখন আন্দাজ সময় রাত এগারোটা। তারা শুয়ে পড়েছিলেন। কয়েকজন বাইরে থেকে তাঁকে ডাকায় তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি ভিতর থেকে কে জানতে চাইলে জবাব আসে কালিয়াচক থানার পুলিশ। এর পর তিনি দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ভেতরে চলে আসেন কয়েকজন পুলিশ। ঢুকেই চড়াও হন তাদের ওপর। মারধর করেন। তার পর ছিনতাই চলে গোটা ঘরে। এমন ঘটনায় তাঁরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তিনি।
এদিকে পুরো ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে মালদা পুলিশের প্রশাসনিক কর্তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আনিষ সরকার এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানান প্রাথমিকভাবে তদন্তের পর এক এএসআই সহ তিন পুলিশ কর্মীকে এই কাজের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে একজন এএসআই নাকি গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল যে ওই বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। কিন্তু এই তথ্যের ভিত্তিতে থানার কোনও বড় অফিসারকে না জানিয়ে নিজেই চলে যান। তল্লাশি চালাতে গিয়ে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র পাননি। পেয়েছিলেন নগদ টাকা। কিন্তু সেই টাকা বাজেয়াপ্ত করে থানায় জমা না করে তার পরিবর্তে উনি পালিয়ে যান। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দাবি, লুটপাটের কোনও অভিযোগ তিনি পাননি। তবে ওই এএসআই সহ দুই কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।