ভারতে আজও এমন অনেক মন্দির রয়েছে, যা রহস্য পূর্ণ। প্রতিটি মন্দিরের নিজস্ব গল্প এবং তাৎপর্য রয়েছে। এরমই এক মন্দির অবস্থিত সুদূর মরুপ্রদেশ রাজস্থানের এক গ্রাম মাহেন্দিপুরে! এই গ্রামেই রয়েছে এক অদ্ভূত বালাজি মন্দির। যেখানে পুজো তো হয় কিন্তু দেবতার কোনো প্রসাদ মেলে না। কেন জানলে চমকে যাবেন।
রাজস্থানের দাউসা জেলার কাছে দুটি পাহাড়ের মাঝে এই বালাজি মন্দির। আকারেও খুব একটা বড় নয় এই মন্দিরটি। নেই খুব জাকজমকও। কিন্তু সমগ্র রাজস্থান তথা ভারত জুড়েই মাহেন্দিপুর বালাজি মন্দির নিয়ে নানা রহস্যগল্পঃ শুনতে পাওয়া যায়।
এই মাহেন্দিপুর বালাজী মন্দিরের প্রসাদ কাউকে খেতে বা নিয়ে যাওয়ার জন্য দেওয়া যায় না। এমনকি আপনি আপনার বাড়ির জন্যেও প্রসাদ নিয়ে যেতে পারবেন না। এমনকি আপনি এখনকার কোনো জিনিসই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন না। কেনোনা বলা হয় এখানকার জিনিস বাড়িতে নিয়ে গেলে নেমে আসবে অশুভ অপদেবতার ছায়া।
কারণ এই একবিংশ শতকেও এই মন্দিরে ভূত বা অপদেবতা তাড়ানোর কাজ করেন পুরোহিতেরা। নিজের উপর থেকে অপদেবতার ছায়া কাটাতে এখানে বহু লোকের আগমন ঘটে। এই মন্দিরে প্রেতরাজ সরকার এবং ভৈরব বাবাজির একটি মূর্তি রয়েছে। প্রতিদিন দুপুর আড়াইটায় প্রেতরাজ সরকারের দরবারে একটি কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়, যাতে মানুষের উপরের অশুভ ছায়া সরিয়ে দেওয়া হয়। এখানে আসার পর অপদেবতার হাত থেকে মুক্তি পেতে দেওয়ালে মাথা ঠুকতে হয়, নয়তো চেন দিয়ে নিজেকে বেঁধে রাখতে হয়। কারণ স্থানীয় মানুষেরা এমনটা বিশ্বাস করেন যে নিজের দেহের উপর অত্যাচার চালালে তবেই শরীরে উপর ভর করেছেন যেসমস্ত উপদেবতা তারা দূরে পালায়। আর এই কারণেই এই মন্দিরে কোনও প্রসাদ বিতরণ করা হয় না। কারণ এই মন্দির যে আর বাকি মন্দিরের মতো নয়। এখানে ভগবানের উপস্থিত থাকলেও এই মন্দির তো আদতে ভূত তাড়ানোর মন্দির। যেখানে বিনা কারণে প্রবেশ মানা। এমনকি একবার এই মাহেন্দিপুরে মন্দির থেকে বেরনোর পর পিছনে ফিরে তাকানো মানা। কারন ফিরে তাকালে ফের সেই অপদেবতারা পুনরায় শরীরে বাসা বাঁধার সুযোগ পেয়ে যায়।
যদিও বিজ্ঞানমনস্ক কারোর কাছে এই সমস্ত যুক্তি ভুয়ো। তবু কখনো রাজস্থান গেলে একবার ঘুরেও আসতে পারেন এখানে।