৭৫ বছর বয়সী এক মহিলাকে খুনের অভিযোগে ব্যাঙ্গালোরে ভাড়াটে হিসাবে বসবাসকারী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্মমভাবে খুন করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে তার শরীরে ৯১ বার ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন জয়কিশান বিএস। ওই যুবকের বয়স ২৯ বছর এবং বি.কম পাশ করার পর তিনি একটি কোম্পানিতে সেলস এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি শেয়ারবাজারে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে সর্বস্ব হারিয়েছিলেন এবং গলা অবধি ঋণের মধ্যে ডুবে ছিলেন। পুলিশের দাবি, বৃদ্ধা মহিলার সোনার গয়না চুরি করতেই ভারতীয় যুবক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনুসারে, মহিলা যশোদাম্মা দক্ষিণ ব্যাঙ্গালোরের বনশঙ্করী স্টেজ
১-এর বিনায়ক নগরে থাকতেন। সে তার বাড়ির দ্বিতীয় তলাটি জয়কিষাণকে ভাড়া দিয়েছিলেন। পুলিশ জানায়, ওই যুবক তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা ধার করেছিল। এই টাকা তিনি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু সবটাই তিনি হারিয়ে ফেলেন। তিনি যশোদাম্মার কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। লোকেরা জয়কিশানের কাছে তাদের টাকা ফেরত চাইছিল। তিনি এটা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। সম্প্রতি একই বিষয় নিয়ে যশোদাম্মার সঙ্গে তার ঝগড়া হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২রা জুলাই জয়কিশান নিঃশব্দে যশোদাম্মার ঘরে প্রবেশ করে এবং একটি ছোট ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করে। তার কর্মকাণ্ডের কথা কেউ বুঝতে না পারে সেই জন্য সে নিজেই যশোদাম্মার ছেলে রাজুকে ফোন করে হত্যার কথা জানায়। রাজু তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বনশঙ্করী স্টেজ ৩-এ থাকেন। পুলিশ জানায়, ধূর্ততা দেখিয়ে সাহায্য করার ভান করতে থাকে জয়কিষান। তিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে যশোদাম্মাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশের কাছে এফআইআর লেখা থেকে শুরু করে শেষকৃত্যে সবেতেই যুক্ত ছিলেন তিনি। তিনি প্রায়ই পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতেন।
এক্সপ্রেস জানায়, প্রাথমিকভাবে পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো ক্লু পায়নি। আশেপাশে কোনো সিসিটিভিও ছিল না। কিংবা ঘটনার দিন কারো আগমন সম্পর্কেও জানা যায়নি। বাড়িতে জোর করে প্রবেশের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পুলিশ শতাধিক সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জয়কিশানকে আগে সন্দেহ করেনি পুলিশ।
কিন্তু, পরে পুলিশ বুঝতে পারে বৃদ্ধ যশোদাম্মার একটি সোনার চেইন ও চারটি চুড়ি নেই। পুলিশ যখন তাদের খবরদারদের মাধ্যমে আশেপাশের এলাকায় গয়না বিক্রেতাদের সন্ধান করে, তখন দেখা যায় যে জয়কিশান কয়েকদিন আগে গয়না বিক্রি করেছে। তার কিছু ঋণও শোধ করেছেন। এ নিয়ে পুলিশ তাকে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ভেঙে পড়ে এবং তার অপরাধ স্বীকার করে।