বাড়িতে ঢুকেছে কোনও অনুপ্রবেশকারী। তার মোকাবিলা করতে গিয়ে গুলি চালিয়েছিলেন গৃহকর্তা। কিন্তু ব্যর্থ নিশানা। বরং সেই গুলিতে মৃত্যু হল তাঁর মেয়ের। মার্কিন মুলুকের (US) ওহাইয়োতে ঘটে গেল এমনই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। নিজের হাতে মেয়েকে খুন করে ফেলেছেন! এই বোধ হতেই শোকে আকুল বাবা। ভেঙ্গে পড়লেন কান্নায়। ১৬ বছরের মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। তবে নিজে থেকেই দোষ স্বীকার করায় বাবাকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কিন্তু এমন একটা ভুল কীভাবে ঘটল? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোরে। সেসময় ১৬ বছরের মেয়েটি বাড়ির গ্যারেজে কাজ করছিল। বাবা ভেবেছিলেন, বাড়িতে কোনও দুষ্কৃতী ঢুকেছে চুরি বা অন্য কোনও কুমতলবে। তাকে শায়েস্তা করার উদ্দেশে পিছন থেকে গুলি (Shot)চালান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়ে মেয়েটি। নিজের মেয়েই গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তা বুঝতে পেরে ওই ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে ডেকে সবটা খুলে বলেন। এরপর মেয়েটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকরা মেয়েটিকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রাণ হারায় ওহাইয়োর (Ohio)১৬ বছরের কিশোরী। পুলিশে ফোন করে মেয়েটির মা কবুল করেন যে তাঁর স্বামী ‘ভুলবশত’ মেয়ের উপর গুলি চালিয়েছেন। তিনি বলেন, ”মেয়ে গ্যারেজে কাজ করছিল। আমার স্বামী ভেবেছিলেন যে বাইরের কেউ বাড়িতে ঢুকেছে। তাই গুলি চালান। তারপর দেখেন, ওহ! এ তো আমাদেরই মেয়ে। হায় ভগবান!”
ঠিক ২ দিন আগেই নর্থ ক্যারোলাইনার (North Carolina) পুলিশ অফিসার অফ-ডিউটি থাকাকালীন নিজের ছেলের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। ১৫ বছরের ছেলেটি গুরুতর জখম হয়ে ভরতি হাসপাতালে। এটিকেও ‘ভুলবশত দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করছে পুলিশ। ওই অফিসার তদন্তে সহযোগিতায় করছেন বলে তাঁকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। মার্কিন মুলুকে অবাধে গুলিচালনার ঘটনার নেপথ্যে বন্দুক আইনকেই দায়ী করছেন অনেকে। সকলের হাতে হাতে বন্দুকের লাইসেন্স এবং আত্মরক্ষার্থে যে কোনও সময় গুলি চালানোর অনুমতি থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মত তাঁদের। বারবার এই আইন সংশোধনের দাবি উঠেছে। কিন্তু বন্দুক আইনে কোনও বদল আসেনি। পরপর ২ দিনের মধ্যে নর্থ ক্যারোলাইনা এবং ওহাইয়োর মর্মান্তিক ঘটনায় ফের সেই বিতর্কিত আইনকে দায়ী করা হচ্ছে।