স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হওয়া কোনও বড় ব্যাপার না, কিন্তু তা বলে সুপারি কিলার দিয়ে স্ত্রী কে হত্যার চেষ্টা? হ্যাঁ এমন ঘটনায় নরেন্দ্রপুরের এক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। স্ত্রীর মতে তার স্বামী চাননি যে তার হাতে স্মার্ট ফোন থাকুক। কিন্তু তিনি একটি স্মার্ট ফোন কেনেন ছেলে মেয়েদের পড়াশুনোর জন্য। স্ত্রীকে সেই ফোনে কথা বলতে দেখে ফেলেছিলেন তিনি এবং রেগে যান। অভিযুক্ত স্বামী রাজেশ ঝাঁকে গ্রেফতারও করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। আরও একজন ধরা পড়ে। কিন্তু এই যুবক থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৩ বছরের জমানো অভিযোগ উগরে দেন। রাজেশের অভিযোগ যে তার স্ত্রী নাকি দিনের পর দিন তার উপর মানসিক নির্যাতন করেছেন। স্বামীর কাছে বার বার ডিভোর্স চেয়েছেন। রাজেশের মতে তিনি সুখে শান্তিতে সংসার করতে চেয়েছিলেন স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে। শুক্রবার রাতে অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে।
রাজেশ ঝাঁ নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগান এলাকার বাসিন্দা। তাঁরই বাড়িতে শুক্রবার রাতে দুই যুবক ঢুকে তাঁর স্ত্রীর গলায় ছুরি ধরে। এমনকি তাকে কোপ বসায়। সাতটি সেলাই পড়ে রাজেশের স্ত্রীর গলায়। যা নিয়ে পাড়ার লোকজনও প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তাঁরাই পুলিশের হাতে তুলে দেন রাজেশকে। দাবি করেন, যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় দোষীর।
এদিকে সংবাদমাধ্যমের কাছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন রাজেশ থানায় দাঁড়িয়ে। তাঁর সম্পত্তি হাতিয়ে স্ত্রী সরে পড়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে দাবি তাঁর। একইসঙ্গে তিনি বলেন, কোনও ঘটনা ঘটলেই একজন স্বামীকে তদন্ত শুরুর আগেই কাঠগড়ায় তুলে দেওয়া হয়। কী করেছে স্ত্রী তা কেউ জানতে চায় না।
রাজেশ ঝাঁ-এর কথায়, “কোনও কিছু হয় যখনই স্বামীই দোষী হয়ে যায়। কোনও দোষ থাকে না স্ত্রীর। দিনের পর দিন স্ত্রী যে মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছে সেটা কেউ দেখছেন না। ও আমাকে ১৩ বছর ধরে টর্চার করে চলেছে। অপমান করে সব সময়। তিন চার ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে কিছু নিয়ে শুরু হলে। আমি অফিস থেকে আসি ১২টা ১টার সময়। আর সময় থাকে তারপর যে আমি স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করব? অনবরত আজেবাজে কথা বলেই যায় খেতে বসলে। আমি রিপোর্ট তৈরি করতে বসি রাতে খেয়ে উঠে। কাজ করি ভোর অবধি। সবসময় আমাকে সেখানে মানসিক চাপ দেয়। কেউ দেখে না সেটা। ওতো ডিভোর্স চেয়ে চলেছে ১৩ বছর ধরে। আমিই তো সবাইকে এতদিন ধরে গুছিয়ে রাখলাম। ওর প্রথম থেকেই আমার যা সম্পত্তি সেগুলি হাতিয়ে আমাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমি কী করেছি কাকে পাঠিয়েছি সেটা পরে দেখবেন। আমাকে ১৩ বছর ধরে কী করা হয়েছে আগে দেখা হোক। কোনও চিৎকার চেঁচামেচি আমি করিনি কখনও। কিছু জানতে দিইনি কাউকে। মুখ বুজে শুধু এত অপমান সয়ে গিয়েছি। কেউ কিছু বলছে না তা নিয়ে।”