গৃহবধূর ওপর জঘন্য অত্যাচারের ঘটনা সামনে এলো পূর্ব বর্ধমানের কালনা থেকে। কেন পরপর জন্মানো দুই সন্তান কন্যা সন্তান? এই অপরাধে মহিলার সারা দেহে সিগারেটের ছ্যাঁকা, গোপানাঙ্গে চরম আঘাত স্বামীর৷ ডিভোর্স দিতে রাজি না হওয়ায় চরমে মাত্রায় চলেছে অত্যাচার৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বধূকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এমন ঘটনায় চমকে উঠেছেন সকলে!
সরকারের হাজার প্রচার সত্বেও কন্যাসন্তান (Girl Child) নিয়ে জনমানসে বদল আনা যায়নি এতটুকুও। এই পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় আবারও তা প্রমাণ হলো। কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় যে মায়ের ক্রোমোজোম নয় পিতার ক্রোমোজোমের দায়ী সেই সত্য অনুধাবন এখনও সমাজ করে উঠতে পারেনি। আজও মেয়ে সন্তান জন্মানোর কারণে অত্যাচার সইতে হয় তার জন্মদাত্রী মাকে। কালনার ঘটনা আবারো তার একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ।
নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবার জানিয়েছে, এই ভাবে যে মহিলার উপরে অত্যাচার চালিয়েছে তার স্বামী সেটা এত দিন ঘুণাক্ষরে জানতেও পারেননি তাঁরা। কিছুদিন আগেই শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন তারা। অত্যাচারের কারণে মানসিক আর শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত মেয়ে তখনই সব কিছু জানান। গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাই মেয়েটির পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে। মহিলার পরিবার জানিয়েছে, মেয়ে প্রথমে চিকিৎসা করে সুস্থ হোক। তার পর এই নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
নির্যাতিতা ওই মহিলা জানিয়েছেন প্রথমবার কন্যা সন্তান জন্মানোর পর সেভাবে কিছু না বুঝলেও দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান হতে অত্যাচারের মাত্রা চরম আকার নেয়। গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা, গোপন অঙ্গে আঘাত কোন কিছুই বাদ যায়নি। মহিলা জানিয়েছেন তার স্বামী তার কাছ থেকে বিচ্ছেদ চেয়েছিল তাই ডিভোর্স পেপারে সাইন করতে বলে। মহিলা সেই কথায় রাজি না হতেই অত্যাচার চরম সীমা পার করে। এতোটাই যে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। স্বামী সাফ সাফ জানিয়ে দেন ওই মহিলাকে বাড়িতে রাখা যাবে না। তাই নারকীয় অত্যাচারের পথ বেছে নেন। অবশেষে পরিবারের কাছে সব জানিয়েছেন মহিলা।