প্রতি সপ্তাহের প্রত্যেকটি দিনের আলাদা আলাদা বিশেষত্ব আছে হিন্দু ধর্মে। মনে করা হয় প্রত্যেকটি দিন এক এক দেবতার জন্য নিবেদিত। যেমন প্রত্যেক সপ্তাহের শুক্রবার দিনটিকে সন্তোষী মায়ের দিন হিসেবে নিবেদিত করা আছে।
টানা ১৬টি শুক্রবার ধরে সন্তোষী মায়ের ব্রত করতে হয়। পুরাণ মতে জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে যাবে মা সন্তোষীকে সন্তুষ্ট করলে কারণ স্বয়ং সিদ্ধিদাতা গণেশের মেয়ে সন্তোষী মা৷ গণেশ পুত্র শুভ আর লাভের ইচ্ছা ছিল রাখি পরানোর তাদের বোন কে। তাই পিতা গণেশ তাঁদের মনোবাসনা পূর্ণ করতে দেবী সন্তোষীর সৃষ্টি করেছিলেন কন্যা রূপে। এই দেবী কে সন্তোষের অধিষ্ঠাত্রী বলে মনে করা হয় কারণ তিনি সকল ভক্তের সকল মনোস্কামনা পূরণ করেন।
রক্তবস্ত্র পরিহিতা চস্তুভুজা হলেন মা সন্তোষী। চারটি হাতের দুটিতে বরাভয় ও সংহার মুদ্রা ধারণ করেন ও বাকী দুটি হাতে ত্রিশূল ও তলোয়ার ধারণ করেন। তিনটি গুণের প্রতীক মায়ের ত্রিশূলপাত ও জ্ঞানের প্রতীক তলোয়ারটি।
এই ব্রতকথার সৃষ্টি তুলনামূলক পরবর্তী কালে।দীর্ঘদিন ধরেই মা সন্তোষীর নেপাল ও উত্তরভারতে আরাধনা করা হয়৷ তবে এখন এই ব্রত বহু বাঙালি ঘরের মহিলারাও রাখেন৷
শুক্রবার দেবীর পুজো কিভাবে করবেন?
টক জাতীয় দ্রব্য এবং আমিষ দ্রব্য প্রদান নিষেধ মা সন্তোষীর পূজাতে। গো জাতীয় প্রাণীকে মায়ের প্রসাদ অল্প পরিমাণে প্রদান করতে হবে। সন্তোষী মায়ের ব্রত প্রতি শুক্রবার করে করা হয়। ঘিয়ের প্রদীপ দিতে হয় মায়ের পূজোতে। শুক্রবারে স্নান সেড়ে শুদ্ধ বস্ত্রে ব্যক্তি নিজেই ভক্তি ভরে মায়ের পূজো করতে পারেন। বট, কাঠাল, পাকুড় পল্লব দ্বারা ঘট স্থাপন করতে হবে। কিন্তু দেওয়া যাবে না আম পল্লব। সব ফুল, বেলপাতা পূজোতে দিতে হবে।
সিঁদুরে ঘি মিশিয়ে ঘটে পুত্তলিকা অঙ্কন করতে হবে এবং গোটা ফল হিসাবে কলা দিতে হবে। ১৬ শুক্রবার এই ভাবে ব্রত করতে হয় । ভেজানো ছোলা , আঁখের গুড়, মিষ্ট ফল ভোগে দিতে হবে। দুধ, ছোলা ঘিতে আলু সহিত ভেজে, মিষ্ট ফল, জল গ্রহণ করতে হবে পূজোর পর উপবাস ভাঙ্গার জন্য। টানা ১৬টি শুক্রবার ধরে সন্তোষী মায়ের ব্রত করতে হয় এবং আটটি ছেলেকে খাওয়ানোর প্রথা রয়েছে শেষ শুক্রবার ব্রত উদযাপন করার জন্য। শুক্রবার সন্তোষী মায়ের কথা পাঠ করতে হয় সন্তোষী মায়ের ব্রত পালন করার জন্য।