মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে পিঠে পাথর বেঁধে এক যুবককে জীবন্ত কুয়ায় ফেলে দিয়ে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করা হয়, তারপর তার পিঠে একটি বড় পাথর বেঁধে কূপে ফেলে দেওয়া হয়। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যু হয় যুবকের।
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর থেকে এই খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। নিহত ব্যক্তি তার দুই বন্ধুকে কিছু টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি টাকা ফেরত চাইলে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। ওই যুবকের নাম প্রবীণ। বন্ধুরা প্রথমে প্রবীণকে বেধড়ক মারধর করে। তারপর তার পিঠে পাথর বেঁধে তাঁকে একটি কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি চন্দ্রপুরের পার্শ্ববর্তী থানা এলাকার। মোরওয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী প্রবীণ সুদের টাকার কারবার করতেন। সে তার দুই বন্ধুকে সুদে ২৫ হাজার টাকা ধার দেয়। মেয়াদ শেষ হলে তিনি টাকা ফেরত চাইলে তার বন্ধুরা টাকা ফেরত দিতে দোনোমনা করতে থাকে। অভিযুক্তরা সুদ বা মূল কোনো টাকাই পরিশোধ করছিল না। প্রবীণ বারবার তাদের কাছে টাকার তাগদা দিত। এ নিয়ে প্রবীণ ও তার বন্ধুদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে।
ঝামেলা এতটাই বেড়ে যায় যে দুই বন্ধু মিলে প্রবীণকে বেধড়ক পিটিয়ে অর্ধমৃত করে ফেলে। এরপরও অভিযুক্তরা থামেনি, প্রবীণের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তার পিঠে একটি বড় পাথর বেঁধে তাকে জীবন্ত অবস্থায় কুয়োয় ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পিঠে পাথর বাঁধা থাকায় প্রবীণ নিজেকে বাঁচাতে না পেরে কুয়োয় পড়ে যন্ত্রণায় ভোগ করে প্রাণ হারান। প্রবীণ দুই দিন বাড়ি না ফিরলে তার মামা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দেরি না করে তার ফোনের লোকেশন ট্রাক করে তার খোঁজ করা শুরু করে।
পুলিশ আধিকারিক মহেশ কোন্দাওয়ার জানিয়েছেন, তদন্তের সময় প্রবীণের গাড়ি পাওয়া যায়। যার গায়ে রক্তের দাগ এবং পাশের স্কুলের পিছনে একটি কুয়োর কাছেও রক্তের দাগের দেখা মেলে। এনডিআরএফ দলকে অনুসন্ধানের জন্য কুয়োর দিকে পাঠানো হয়। যেখানে একটি পাথর বাঁধা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। প্রবীণের পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহটিকে শনাক্ত করেন এবং পরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
অভিযুক্তকে ধরতে, পুলিশ প্রবীণের মোবাইল রেকর্ড সহ সন্দেহভাজন দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, নিহত ব্যক্তি সুদের টাকা দিতেন। টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে খুন হন প্রবীণ।