অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার আমাদের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাদের থাকতে হবে সাবধান। সকলের মধ্যে প্রয়োজন সেই সম্পর্কে ধারণা। তবেই আগামীদিনে পৃথিবীতে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া যাবে। লড়াই করা যাবে কঠিন সব রোগের সঙ্গে।
অ্যান্টিবায়োটিকের খারাপ ব্যবহার বলতে কী বোঝানো হয়?
অ্যান্টিবায়োটিকের খারাপ ব্যবহার বলতে পুরনো প্রেসক্রপশনে ওষুধ কেনা, প্রেসক্রিপশন বলে দেওয়া কোর্স পূর্ণ না করা, কম সময় ধরে চিকিৎসা ইত্যাদি সমস্যার কথা বলা হয়েছে। বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ রুদ্রজিৎ পাল এই প্রসঙ্গে বলেন, এক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স বলতে বোঝানো হচ্ছে, সেই অ্যান্টিবায়োটিক আর সেই নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছে না। এর পিছনে রয়েছে তিনটি কারণ। প্রথমত, আমাদের দেশে ওষুধের দোকানে গিয়ে চাইলেই অ্যান্টিবায়োটিক কেনা যায়। ফলে কত ডোজে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত, কী অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত এই নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। দ্বিতীয়ত, অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে আমাদের দেশে কোনও গাইডলাইন নেই। এই যেমন সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়ারিয়াতেও আমরা অ্যান্টিবায়োটিক খাই। যদিও তার কোনও প্রয়োজন নেই। এই অসুখগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভাইরাল। তৃতীয়ত, মাংস উৎপাদন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বহু অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়। সেই খাবারগুলি খাওয়ার ফলেও শরীরে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স।
আমাদের কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এই বিশেষ ওষুধটি প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছে। এই ওষুধের পিঠে ভর দিয়েই মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কমেছে সংক্রমণ থেকে মৃত্যু ভয়। তবে আমাদের বেশকিছু ব্যবহার এই রোগে আমাদের রোজ ভোগাচ্ছে। ডা: পালের মতে, আমাদের অ্যান্টাবায়োটিক খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। তারপরই খেতে হবে অ্যান্টিবায়োটিক। কারণ এভাবে অবিবেচকের মতো অ্যান্টিবায়োটিক খেতে থাকলে আর আগামীদিনে কোনও অ্যান্টিবায়োটিকই ব্যবহার করা যাবে না। এখনই ফার্স্ট লাইন অব ড্রাগ অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করে না। আগামীদিনে সমস্যা আরও জটিল হবে। তখন হাতে থাকবে না কোনও বিকল্প।