রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বালির নিশ্চিন্দার দুই গৃহবধূকে বুধবারই খুজেঁ আসানসোল স্টেশন ফিরিয়ে এনেছে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। পুলিশি জেরার মুখে পরে ওই দুই গৃহবধূ জানিয়েছেন, কেন তাঁরা তাঁদেরই বাড়ীতে কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়িয়েছিলেন বিবাহ-বহির্ভূত পরকীয়া সম্পর্কে।
গত ১৫ই ডিসেম্বর শীতের পোশাক কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরনোর পর আর বাড়ি ফেরেন নি বালির বাসিন্দা অনন্যা কর্মকার, তাঁর জা রিয়া কর্মকার এবং রিয়ার সাত শিশু পুত্র আয়ুষ। তার পর তাঁদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তদন্তে নামে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। তাদের মোবাইল ট্রাক করে আগেই খবর পেয়েছিলেন তারা মুম্বাই আছেন দুই রাজমিস্ত্রীর সাথে। সেখান থেকে ফেরার সময় বুধবারই আসানসোল স্টেশন থেকে তাঁদের পাকড়াও ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। বুধবার পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই প্রতিবাদ করে উঠেছিলেন সেই কর্মকার পরিবারের বড় বউ অনন্যা। ভীড় ট্রেনে সকলের সামনেই পুলিশকে বলেছিলেন নিজেদের প্রেমের কথা এবং কোন অপরাধে তাকে ধরা হচ্ছে। একথা জানা গেছে পুলিশ সূত্রে। পুলিশকে অনন্যা এ-ও জানান, ‘‘আমরা স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলাম। কেউ জোর জবরদস্তি করে নিয়ে যায়নি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় কর্মকার পরিবারের ছোট বউ রিয়া কোনো কথা বলেন নি। বৃহস্পতিবার আদালতে দুই বউ নিজেদের গোপন জবানবন্দি দেন। অপর দিকে দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাসকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন আদালতের বিচারক।
বড় বউ অনন্যা পুলিশকে জানিয়েছেন, আট বছর হল বিয়ে হয়েছে কিন্তু নিঃসন্তান সে। স্বামী ব্যাস্ত এবং কোনো সময় দেয় না। মানসিক অবসাদ লাগতো তার, অনুভব করতেন একাকিত্ব। কিছুটা একই বক্তব্য তাঁর জা রিয়ার। তাদের বিয়ে হয়েছে ১০ বছর আগে। রিয়ার ৭ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কিন্তু স্বামী সময় দিতে না পারাতেই আর সংসার জীবনে একঘেয়েমি ঘিরে বিরক্তি তৈরি হয়েছিল তাঁর মনেও। এ রকম অবস্থায় তাদের বাড়ীতে কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রি শেখর এবং শুভজিতের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁদের। সহজেই আকৃষ্ট হন। এর পরই তাদের হাত ধরে তাঁরা বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কর্মকার পরিবারের প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রিয়ার স্বামী প্রভাত তাদের ছেলে আয়ুষের দুবছর বয়স থেকেই কর্মসূত্রে ছিলেন দুবাইতে। বছর পাঁচেক সেখানেই কাটিয়ে কয়েক মাস আগে তিনি ফিরে আসেন নিশ্চিন্দার বাড়িতে। স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্বের জেরেই কি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানো? উঠছে প্রশ্ন।