করোনা ভাইরাস (Coronavirus) অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ (Corona Second Wave) তছনছ করে দিয়েছিল ভারতবর্ষকে। ভেঙে দিয়েছে বিশ্বের সমস্ত রেকর্ড। ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই মৃত্যু মিছিল বেড়েছে চূড়ান্ত গতিতে। মারা গিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় কার্যত এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে কবরস্থানে জায়গা দেওয়া যাচ্ছিল না মৃতদের (Covid Death)। শ্মশানে দিন–রাত জ্বলছিল চুল্লি। চুল্লির দেওয়াল গলে যাওয়ার পরিস্থিতিও হাজির হচ্ছিল কিছু জায়গায়। ঘণ্টার পর ঘন্টা জ্বালিয়েও দাহ শেষ করা যায়নি। নিরুপায় হয়ে বহু ক্ষেত্রেই গঙ্গা-যমুনার মত নদীতে কোভিড রোগীদের মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়েছে কেউ কেউ। কোথাও বালির স্তুপে পোঁতা মিলেছে মৃতদেহ। মৃতদেহগুলি দাহের পর জমতে থেকেছে প্রচুর চিতাভস্ম (Covid death Ashes)। কোভিড বিধির কারণে (Coronavirus Protocol) পরিবারের লোকজন তা নিয়ে জলে ভাসাতে পারেনি। এই চিতাভস্মকেই এবার কোভিডে মৃতদের স্মৃতি সন্মান রক্ষার্থে কাজে লাগাতে চায় ভোপাল প্রশাসন। তৈরি করতে চায় মৃতদের স্মরণে একটি পার্ক।
১৫ মার্চ থেকে ১৫ জুন ভোপালের ভাদভাদা বিশ্রাম ঘাটে, ৬ হাজার দেহ পোড়ানো হয়েছে এই তিন মাসে। এখন চিতাভস্ম পড়ে রয়েছে ২১ ট্রাক। কারণ পরিবারের লোক কঠিন বিধির কারণে তা নিতে আসতে পারেননি। ১২ হাজার বর্গফিটের পার্ক এই চিতাভস্ম দিয়ে তৈরি করতে চলেছে শ্মশান কমিটি।
মমতেশ শর্মা শ্মশান ম্যানেডমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান জানালেন, কোনওমতে অস্থি নিয়ে গিয়েছেন অনেক পরিবারই। কিন্তু নিতে পারেননি চিতাভস্ম। দূষণ বাড়বে সেগুলো নর্মদার জলে ফেললে। তাই পার্ক তৈরি হবে তার সঙ্গে মাটি, গোবর, কাঠের গুঁড়ো, বালি মিশিয়ে। সেই পার্কে বৃক্ষরোপণ হবে। চারা রোপণ করতে পারবেন মৃতের পরিবার চাইলে প্রিয়জনের স্মৃতিতে। এই গাছ পোঁতার সময় পাবেন ৫ থেকে ৭ জুলাই।
মমতেশ শর্মা আরও জানালেন, চারা রোপণ করা হবে এই পার্কে ৩,৫০০ থেকে ৪০০০ হাজার। সেগুলোর বৃক্ষে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে পরিণত হতে। ব্যবহার করা হবে জাপানের ‘মিয়াওয়াকি’ প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে সহজেই ঘন অরণ্য তৈরি করা যায়।